যৌনতা সম্পর্কিত ৩৬৪টি প্রশ্ন এবং উত্তর

প্রশ্নঃ আমার বয়স ১৩ বছর। আমি কি এখন হস্তমৈথুন শুরু করতে পারি?
উত্তরঃ হস্তমৈথুন শুরু করার নির্দিষ্ট কোনো বয়স নেই। চাইলে করতে পারো।
প্রশ্নঃ বয়ঃপ্রাপ্তির আগে হস্তমৈথুন করলে কি লিঙ্গ থেকে কিছু বের হবে?
উত্তরঃ হ্যাঁ, কিছু রস ক্ষরণ হবে।
প্রশ্নঃ প্রতিদিন ভোরে আমার লিঙ্গ শক্ত হয়ে যায় এবং হস্তমৈথুন না করা পর্যন্ত নরম হয় না, কেন?
উত্তরঃ এ কথাটা অনেকেরই। এটা দেখা গেছে যে, অনেক পুরুষের যৌন উত্তেজনা ভোরে ঘুম থেকে জাগার পর তীব্র থাকে। এ সময় প্রস্রাব করলে লিঙ্গ নরম হয়ে আসে।
প্রশ্নঃ আমি আমার স্তনের বোঁটা ডলতে ভালোবাসি। কিন্তু মনে হয় সেখানে দলামতো কিছু আছে এবং ব্যথা করে।
উত্তরঃ হ্যাঁ বয়ঃপ্রাপ্তিতে পুরুষ স্তনে সামান্য পরিবর্তন হয়। একটু বড় হয়, রসক্ষরণ হয় ও ব্যথা হয়। খুব বেশি ব্যথা হলে ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া ভালো।
প্রশ্নঃ ভায়াগ্রা খেলে লিঙ্গ কি খুব দ্রুত বাড়ে?
উত্তরঃ না। ভায়াগ্রা যৌন অক্ষম পুরুষের লিঙ্গকে শক্ত ও যৌন সক্ষম করে।
প্রশ্নঃ আমার বয়স ১৪ বছর। আমার স্তনের বোঁটা ফুলে গেছে। সেখান থেকে দুধের মতো রস বের হয়। বয়ঃপ্রাপ্তির সময় এটা কি স্বাভাবিক?
উত্তরঃ হ্যাঁ। তবে সবার এটা হয় না। সামান্য কিছুদিন পর এটা ঠিক হয়ে যায়।
প্রশ্ আমার বয়স ১৩ বছর। এখনো স্বপ্নদোষ হয়নি, এটা কি অস্বাভাবিক?
উত্তরঃ হস্তমৈথুন না করলে স্বপ্নদোষ হয়। তবে স্বপ্নদোষ জীবনের জন্য অতীব প্রয়োজনীয় এমন কিছু না। স্বপ্নদোষ হলেও অনেক সময় কাপড়ে শুকিয়ে যায়, বোঝা যায় না।
প্রশ্নঃ আমার বয়ঃপ্রাপ্তি সম্পূর্ণ হলো কিভাবে জানব? কোনো লক্ষণ দিয়ে এটা কি বোঝা যায়?
উত্তরঃ যখন হঠাৎ লম্বা হয় কেউ, যখন শরীরে লোম গজায়, গলার স্বরে পরিবর্তন হয়, লিঙ্গ বড় হয় এভাবে কৈশোর ছেড়ে যৌবনে পা দেয়ার মধ্য দিয়ে বয়ঃপ্রাপ্তি সম্পূর্ণ হয়।
প্রশ্নঃ আমার বয়স ১৮ বছর। আমি প্রচুর গাঁজা ও মদ খেয়েছি। আমার লিঙ্গ ছোট, লিঙ্গ কি আরো বড় হবে? হলে কতদিন লাগবে।
উত্তরঃ গাঁজা, মদ শরীরের পরিবর্তনকে বাধা দেয়। ওগুলো ছেড়ে দিলে পরিবর্তন হবে। তবে ডাক্তার দেখানো ভালো।
প্রশ্নঃ আমার বয়স ১২-১৩ বছর। আমার লিঙ্গের দৈর্ঘ্য ৬ ইঞ্চি আর কতদিন লিঙ্গ বড় হবে?
উত্তরঃ বলা যাচ্ছে না, তবে আপনার বয়ঃপ্রাপ্তি খুব দ্রুত হয়েছে।
প্রশ্নঃ আমার বয়স ১৪ বছর। আমার লিঙ্গে, অণ্ডকোষথলিতে, উরুতে সাদা সাদা ক্ষত চিহ্নের মতো দাগ হয়েছে। এটা কি কোনো অসুখ?
উত্তরঃ চিন্তা করার মতো কিছু হয়নি। বয়ঃপ্রাপ্তিতে এমন দাগ হয়- এটা স্বাভাবিক।
প্রশ্নঃ লিঙ্গে বা অণ্ডকোষথলিতে কি ব্রণ হতে পারে?
উত্তরঃ হ্যাঁ হতে পারে।

প্রশ্নঃ আমার বয়স ১৩ বছর। আমি যখন হস্তমৈথুন করি তখন সামান্য তরল বের হয়, বীর্য বের হয় না। কিন্তু স্বপ্নদোষ হয় এমন কি হতে পারে?
উত্তরঃ হ্যাঁ হতে পারে। বয়ঃপ্রাপ্তির শুরুতে এমনই হয়।
প্রশ্নঃ আমার বয়স ১৪ বছর। আমি কি ভারোত্তোলন করতে পারব? এটা কি আমার শরীরের টেস্টোস্টেরন গঠনে সমস্যা করবে? হলে কী ধরনের?
উত্তরঃ ১৪ বছর বয়সে ভারোত্তোলন শুরু করা যায়। ভারোত্তোলন মাংসপেশি গঠনে সাহায্য করে। তবে এসব ধীরে ধীরে করা ভালো। স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ না নেয়া ভালো, এর নানা ক্ষতিকারক দিক আছে।
প্রশ্নঃ আমার বয়স ১৫ বছর। বয়ঃপ্রাপ্তির আগে হস্তমৈথুন করলে লিঙ্গের সাইজের ওপর কি প্রভাব পড়ে?
উত্তরঃ না
প্রশ্নঃ বয়ঃপ্রাপ্তির আগে হস্তমৈথুন করলে লিঙ্গ কি বড় হয়?
উত্তরঃ না
প্রশ্নঃ আমার বয়স ১৫ বছর। আমার লিঙ্গ প্রায়ই আপনা থেকে শক্ত হযে দঁ্বাড়িয়ে যায়, এর মানে কি লিঙ্গ বড় হচ্ছে?
উত্তরঃ আপনা থেকে লিঙ্গ শক্ত হওয়া বা দাঁড়িয়ে যাওয়াকে Spontaneous erection বলে। এটা কারো কারো হতে দেখা যায়। এর সঠিক কারণ জানা যায়নি। তবে ভয়ের কিছু না, বয়স বাড়ার সাথে সাথে এটা কমতে থাকে।
প্রশ্নঃ আমার বয়স ১৩ বছর। এখনই আমার সারা শরীরে অনেক লোম জন্মেছে। এত তাড়াতাড়ি এরকম কি স্বাভাবিক?
উত্তরঃ মনে হয় বয়ঃপ্রাপ্তির লক্ষণগুলো খুব বেশি এবং তাড়াতাড়ি প্রকাশ পেয়েছে। তবে চিন্তিত হলে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
প্রশ্নঃ আমার বয়স ১৬ বছর। সুন্দর মেয়ে দেখলে হস্তমৈথুন করার প্রচণ্ড ইচ্ছা হয়, আমার এটা কি ঠিক?

উত্তরঃ সুন্দর মেয়ে দেখলে মনে ইচ্ছা জাগে। তাই বলে দেখার সাথে সাথে হস্তমৈথুন করতে হবে এটা ঠিক না। নিজেকে সংযত করতে শিখতে হবে। নইলে মানসিক সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে।

প্রশ্নঃ হস্তমৈথুন করলে শুনেছি উচ্চতা কমে যায়?

উত্তরঃ হস্তমৈথুন করলে শারীরিক কোনো পরিবর্তন হয় না। লম্বা হওয়ার সাথে ওটা কোনো বাধা নয়।

প্রশ্নঃ খুব বেশি হস্তমৈথুন করলে কি ছেলে সন্তান না হয়ে মেয়ে সন্তান হয়? কখন হস্তমৈথুন করলে ছেলে বা মেয়ে হবে? কী করে ছেলে বা মেয়ে সন্তান জন্মদান নিশ্চিত করা যায়?

উত্তরঃ হস্তমৈথুন করে ছেলে বা মেয়ের জন্ম নিশ্চিত করা যায় না। আপনি সন্তানের ব্যাপারে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।

প্রশ্নঃ আমার স্তনের বোঁটা দুটো বেশ বড় ও ব্যথা করে। আমার বুক চওড়া হচ্ছে, আমার কি স্তন বড় হবে?

উত্তরঃ ওগুলো প্রকৃত স্তন না। বয়ঃপ্রাপ্তির সময়ে প্রোল্যাকটিন নামে হরমোনের জন্য এরকম অনেকের হয়। যদি সমস্যা দীর্ঘদিনের হয় তাহলে ডাক্তার দেখিয়ে প্রোল্যাকটিনের মাত্রা দেখে নিতে পারেন।

প্রশ্নঃ আমার লিঙ্গ সহজেই শক্ত হয়। সেক্সি মেয়ে দেখলেই হয়। খুব সম্প্রতি আমি একটা মেয়ে দেখেছি খুব সুন্দর। তাকে খুব ভালো লাগে এবং তার জন্য অনেক কিছু করতে ইচ্ছা করে। সেও আমার প্রতি একই রকম আসক্ত। আমার শরীরের প্রতি তার টানও খুব বেশি। কিন্তু তাকে কাছে পেলে কিছুতেই আমার লিঙ্গ শক্ত হয় না। তার জন্য আবেগের কারণে কি এটা হচ্ছে?

উত্তরঃ আপনি নিজেই নিজের উত্তর দিয়েছেন। আপনি এতটাই তার প্রতি আসক্ত হয়ে পড়েছেন যে সে আপনার কাছে শুধুই ‘সেক্সি’ নয় অন্য কোনো বিশেষ বস্তুতে পরিণত হয়েছে। কখনো ভালোবাসার সাথে দুশ্চিন্তা, নার্ভাস লাগা, হতাশা জড়িয়ে যেতে পারে। এমনও হতে পারে মেয়েটি দেখতে সুন্দর কিন্তু তার আহ্বান গভীর কিছু নয়। তার দৃষ্টিও যৌন আবেগের জন্ম দেয় না। স্থির হোন, শান্ত হোন, সময় নিন আস্তে আস্তে ঠিক হয়ে যাবে।

প্রশ্নঃ আমার লিঙ্গ চোষানোর পর ৪৫ সেকেন্ডের মধ্যেই বীর্যপাত হয়ে যাচ্ছে। কী করে সময়টা বাড়াতে পারি? আমার ভয় হচ্ছে মেয়েটাকে হয়তো যৌনতৃপ্তি দিতে পারব না?

উত্তরঃ কারো কারো দ্রুত বীর্যস্খলন হয়। বয়স বাড়ার সাথে সাথে এটা বদলে যায়। এতদিন অপেক্ষা না করেও কাজটি সারা যায়। মেয়েটার সাথে মিলে একসাথে চেষ্টা করতে হবে। যখনই বীর্যপাত হওয়ার সম্ভাবনা তখনই থেমে যান। দেখবেন বীর্যপাত হচ্ছে না। এভাবে বারেবারে করতে থাকুন দেখবেন বীর্যস্খলন পেছাতে পারবেন। একে ‘Stop and go’ পদ্ধতি বলে।

প্রশ্নঃ আমি মেয়েদের চুমু দিতে পারি না। কী করে সঠিকভাবে চুমু দিতে পারব?

উত্তরঃ যদি কেউ বলে আপনি পারেন না এটা ঠিক না। যে কোনো ভালো মেয়েও আপনার মতোই নার্ভাস হয়ে যাবে। মেয়েটিকে ভালোভাবে বুঝে নিন জড়তা কেটে যাবে, তাড়াহুড়ার কি আছে?

প্রশ্নঃ আমার শালীকে নিয়ে যৌন চিন্তা হয়। ঠেকাতে পারি না, বিষয়টা বেশ ক্ষতিকর। সে যৌন বিষয় নিয়ে আমাকে উত্তেজিত করে।

উত্তরঃ এরকম হতে পারে। তবে বাস্তব যৌনসঙ্গম করার পরিকল্পনা না করা ভালো। নিজেকে সংযত করুন দেখবেন কল্পনা কমে যাবে। তাকে বলুন আমি আমার স্ত্রীকে ভালোবাসি, কিছুতেই আমাদের সংসারে সমস্যা ডেকে আনব না। তাকেও বোঝানোর চেষ্টা করুন, সাফল্য আসবে।

প্রশ্নঃ আমার বয়স যখন ৮ বছর তখন আমার বয়সী এক আত্মীয়ার সাথে যৌনসঙ্গম খেলা খেলতাম। ও সময়ে যোনিতে লিঙ্গ প্রবেশ করত না। এভাবে এক বছর চলেছিল। এটা কি স্বাভাবিক ছিল। এতে কি আমার যৌন গুণাবলী বাধা পাবে?

উত্তরঃ এটা স্বাভাবিকভাবে হতে পারে। এতে শারীরিক বা মানসিক যৌন পরিবর্তনে কোনো সমস্যা হবে না। মনের ওপর কতটা প্রভাব ফেলবে তা নির্ভর করে যৌন কাজের অভিজ্ঞতাগুলোর ফল আপনার ওপর কী প্রভাব ফেলল।

প্রশ্নঃ যৌন ইচ্ছা প্রবল কাদের- ছেলেদের না মেয়েদের?

উত্তরঃ যৌন ইচ্ছার জন্য যে হরমোন দায়ী তার নাম টেস্টোস্টেরন। পুরুষদের এই হরমোন বেশি তৈরি হয়। সুতরাং তাত্ত্বিকভাবে পুরুষের যৌন ইচ্ছা প্রবল হওয়া উচিত। ব্যক্তিত্ব, অ্যাড্রিনালিন মনের অবস্থা, অতীত অভিজ্ঞতা এসবও যৌন ইচ্ছাকে প্রভাবিত করে। তাই দেখা যায় কোনো কোনো মেয়ের যৌন ইচ্ছা পুরুষদের চেয়ে প্রবল।

প্রশ্নঃ আমার বয়স ২৩ বছর। আমার স্বামীর বয়স ২৭ বছর। আমাদের বিয়ে হয়েছে ১ বছর। সপ্তাহে ২-৩ বার সঙ্গম করি। এটা কি স্বাভাবিক?

উত্তরঃ হ্যাঁ অস্বাভাবিক মনে হচ্ছে না।

প্রশ্নঃ সপ্তাহে কতদিন যৌনসঙ্গম করা উচিত?

উত্তরঃ এর জন্য ধরাবাঁধা কোনো নিয়ম নেই। সপ্তাহে ১ দিন থেকে মাসে প্রতিদিন যে কোনো রকমই হতে পারে।
প্রশ্নঃ মাসে ১ বার হস্তমৈথুন কি স্বাস্থ্যের জন্য ভালো? যদি যৌনসঙ্গম ব করা হয় তাহলে কি ক্ষতি হবে?
উত্তরঃ হস্তমৈথুন বা যৌনসঙ্গম শরীরের জন্য ভালো। হস্তমৈথুন বা যৌনসঙ্গম ব করলে তৈরি হওয়া বীর্য স্বপ্নদোষের মাধ্যমে বেরিয়ে আসে, এভাবেই তার নিজের ব্যবস্থা করে।
প্রশ্নঃ আমি আমার যৌনসঙ্গিনীর মুখের ভেতরে ও উপরে বীর্যপাত করতে ভালোবাসি। এটা কি ঠিক?
উত্তরঃ বিষয়টা আপনাদের দুজনের। জোর করলে বিষয়টা ভালো না। আপনার যৌনসঙ্গিনীর ভালো লাগা, মন্দ লাগা, ইচ্ছার কথা জেনে সেভাবে আচরণ করা ভালো।

প্রশ্নঃ আমি যৌনসঙ্গম করেছি ৪ বার। প্রথমবার ৪৫ মিনিট পর বীর্যপাত হয়েছে, পরে ৫ মিনিটের মধ্যেই বীর্যপাত হয়ে গেছে, আমার মনে হচ্ছে সঙ্গিনীর তৃপ্তি হচ্ছে না।

উত্তরঃ মাত্র ৪ বার সঙ্গম থেকেই বলা যায় না প্রতিবারই খুব তাড়াতাড়ি বীর্যপাত হয়ে যাবে। ৫ মিনিটের বীর্যপাত হবে এটাই স্বাভাবিক। মনে হয় আপনার সঙ্গিনী আপনার কাছে খুব যৌন উত্তেজনাময়ী, ফলে তাড়াতাড়ি বীর্যপাত হয়ে যাচ্ছে। তেমন হলে তাকে বলুন। তবে যখনই বীর্যপাত হওয়ার মতো হয় তখনই লিঙ্গ বের করে নিন। অপেক্ষা করুন কিছুক্ষণ, তারপর আবার শুরু করুন। এভাবে বীর্যপাত পিছিয়ে দেয়া যায়।

প্রশ্নঃ যৌন সাহিত্য পড়া কি ‘পর্নোগ্রাফি’র মধ্যে পড়ে?

উত্তরঃ পর্নোগ্রাফি বলতে নগ্ন চিত্র বোঝানো হয়। নগ্ন সাহিত্য ও নগ্নচিত্র এক জিনিস নয়। নগ্ন সাহিত্য যৌন কর্মকাণ্ডের বর্ণনাসমৃদ্ধ আর পর্নোগ্রাফি নগ্ন যৌনচিত্র ও যৌনসঙ্গমের চিত্র সমৃদ্ধ, দুটো দুই জিনিস।

প্রশ্নঃ আমি চাই আমার সঙ্গিনী আমার বীর্য খেয়ে ফেলুক। কিন্তু অসুখ হওয়ার ভয়ে সে খায় না।

উত্তরঃ যৌন রোগে আক্রান্ত হলে সঙ্গিনীর অবশ্যই যৌনরোগ হবে। তবে বীর্য খেয়ে ফেলা বিষয়টা রোগ সৃষ্টি করতে না পারলেও ঠিক নয়।

প্রশ্নঃ আমার ভাইয়ের বয়স ১২। ১০ বছর বয়স যখন তখন থেকেই সে আমাকে জড়িয়ে ধরে, আমার বাবীরা এলেও তাদের শরীরে হাত দেয়, জড়িয়ে ধরে। অভিভাবকের সাথে কথা বলেছি, তারা বলে এ বয়সে ওরকম হয়।

উত্তরঃ সে যদি বাবীদের স্তনে, নিতম্বে বা গোপনাঙ্গে হাত দেয় তাহলে তাকে অবশ্যই থামাতে হবে। কারণ এগুলো যৌন অত্যাচার। কাজটা অবশ্যই সঠিক নয়। এখনই না থামালে পরে বড় সমস্যা দেখা দেবে।

প্রশ্নঃ লিঙ্গ চুষে চুষে কি বড় করা যায়? এটা অভ্যাসে পরিণত হয়েছে, কী করে ছাড়াতে পারি?

উত্তরঃ না। ডাক্তারের পরামর্শ নিন। আশা করি ছাড়তে পারবেন।

প্রশ্নঃ লিঙ্গ ৩ ইঞ্চি হওয়ায় আমার সঙ্গিনী তৃপ্তি পায় না। কী করা যাবে? বড় করার কোনো পদ্ধতি আছে কি না?

উত্তরঃ লিঙ্গ অপারেশন করে বড় করলে নরম থাকে। খুব শক্ত হয় না। এসব না করে এমন যৌনসঙ্গম পদ্ধতি ব্যবহার করুন যাতে সঙ্গিনী তৃপ্তি পায়।

প্রশ্নঃ আমার লিঙ্গ অনেক লম্বা। এটা কি বাঁকিয়ে আমার মলদ্বারে ঢুকিয়ে বীর্যপাত করতে পারি?

উত্তরঃ হ্যাঁ। আশ্চর্য শোনাচ্ছে। তবুও অনেকে করে। তবে মলদ্বারের জীবাণু লিঙ্গে লেগে অসুখ হতে পারে।

প্রশ্নঃ কোন বয়সে যৌনসঙ্গম শুরু করা ভালো?

উত্তরঃ ১৮ বছরের পর হলে ভালো।

প্রশ্নঃ কনডম কেনার জন্য বয়ঃসীমা আছে?

উত্তরঃ তেমন কোনো কিছু শুনিনি।

প্রশ্নঃ কী করে বীর্যপাতের সময় পেছাতে পারি?

উত্তরঃ ‘Stop and go’ পদ্ধতিতে। এ ব্যাপারে উপরে আলোচনা করা হয়েছে।

প্রশ্নঃ এক জায়গায় বসে একমনে যৌন কল্পনা করা এবং লিঙ্গ শক্ত করা কি স্বাভাবিক কাজ?

উত্তরঃ হ্যাঁ খুবই স্বাভাবিক। এর মানে হলো আপনি বয়ঃপ্রাপ্তি হয়েছেন- যৌন কল্পনা করতে পারেন এবং প্রকাশ ঘটাতে পারেন।

প্রশ্নঃ আমার সঙ্গিনী যৌনসঙ্গম করতে চায়। আমি কোনোদিন করিনি, কী করে করব বলে দিন।

উত্তরঃ তাড়াহুড়ার কিছু নেই। মেয়েরা ছেলেদের অনেক আগে আগে বোঝে, সময় নিন। এক সময় আপনার ভেতর থেকেই বেরিয়ে আসবে কী করে যৌনসঙ্গম করবেন।

প্রশ্নঃ যৌনসঙ্গমের সবচেয়ে কম সময় ও সবচেয়ে দীর্ঘ সময় কতটা? কতক্ষণ সঙ্গম করা উচিত?

উত্তরঃ সম্ভবত ৪০ সেঃ এবং ১৮ দিন। সঙ্গমকাল কতটা হবে এ নিয়ে ধরাবাঁধা কোনো নিয়ম নেই। দুজনের সমমতিক্রমে যৌনসঙ্গমকাল ঠিক করা যায়।

প্রশ্নঃ এইচআইভি ভাইরাস কনডমের আবরণ দিয়ে প্রবেশ করতে পারে কি না?

উত্তরঃ না। প্রবেশ করতে পারে না বলেই যৌনসঙ্গমের সময় কনডমের ব্যবহার করতে বলা হচ্ছে। যৌনরোগ ঠেকানোর ৩টি উপায়-

(১) অন্যের সাথে যৌনসঙ্গম থেকে বিরত থাকা

(২) একাধিক সঙ্গী বা সঙ্গিনীর সাথে যৌনসঙ্গম না করা

(৩) কনডম ব্যবহার করা

প্রশ্নঃ যৌনাঙ্গ চুষিয়ে নিলে কি যৌনরোগ হতে পারে? কী কী অসুখ হতে পারে?

উত্তরঃ হ্যাঁ। গনোরিয়া, হারপিস, আঁচিল, ছত্রাক, সিফিলিস, ক্যানডিডিয়াসিস, শ্যাংক্রয়েড, এলজিভি, এইচআইভি যে কোনো কিছুই হতে পারে।

প্রশ্নঃ ১০ বছরের মেয়ের সাথে যৌনসঙ্গম করা কি ঠিক হবে? আমার বয়স ১৬ বছর।

উত্তরঃ না।

প্রশ্নঃ আমার লিঙ্গ শক্ত হচ্ছে না। ভায়াগ্রা খেয়েও কোনো উপকার হচ্ছে না। আমার স্ত্রী অসন্তুষ্ট, কি করা উচিত?

উত্তরঃ ডাক্তারের পরামর্শ নিন। ভায়াগ্রাতে উন্নতি না হলে সমস্যাটা মানসিক। আপনি ও আপনার স্ত্রী দুজনে মিলে ডাক্তারের শরণাপন্ন হোন। মানসিক সমস্যা থাকলে কাউন্সিলিংয়ের মাধ্যমে উন্নতি করা যাবে।

প্রশ্নঃ আমি মেয়েদের প্যান্টি পরলে উত্তেজনাবোধ করি। আমি মাঝে মাঝে প্যান্টি পরে উত্তেজিত হই ও হস্তমৈথুন করি, এটা কি ঠিক?

উত্তরঃ উত্তেজনা নানাভাবে আসে। তবে প্যান্টি ব্যবহার না করে ছোট জাঙ্গিয়া ব্যবহার করে দেখতে পারেন।

প্রশ্নঃ আমার বয়স ১৩ বছর। বয়স্ক লোকের সাথে যৌনসঙ্গম করার ইচ্ছা হয়। কি করে সঙ্গম করতে পারব।

উত্তরঃ এই বয়সে যৌনসঙ্গম ঠিক নয়। ১৮+ হলে সঙ্গম করাটা সঙ্গত। তবে নিজেকে সংযত করতে পারলে ভালো হয়।

প্রশ্নঃ হস্তমৈথুন করার সময়ে মলদ্বারে আঙ্গুল ঢুকালে বীর্যপাতের আনন্দ বেড়ে যায় এটা কী ঠিক?

উত্তরঃ বিভিন্ন জনে বিভিন্ন উপায়ে বীর্যপাতের আনন্দ অনুভব করে। মলদ্বারে আঙ্গুল ঢোকালে আনন্দ বাড়ে কি না সেটা করে দেখতে পারেন। সেক্ষেত্রে পিচ্ছিলকারক কিছু জেলি ব্যবহার করা ভালো।

প্রশ্নঃ হস্তমৈথুনের সময় কতক্ষণ পর বীর্যস্খলন হওয়া উচিত। নারী সঙ্গমের সময় কতক্ষণ পর বীর্যস্খলন হওয়া উচিত?

উত্তরঃ এর কোনো নির্দিষ্ট সময় নেই। এক এক জনের এক এক সময় লাগে। তবে ‘Stop and go’ পদ্ধতিতে বীর্যপাতের সময় পিছিয়ে দেয়া যায়। নারী সঙ্গমের সময়কাল কতটা হবে সেক্ষেত্রেও ওই একই কথা প্রযোজ্য।

প্রশ্নঃ আমার এক পুরুষ বুর প্রতি যৌন আকর্ষণ অনুভব করি। আমি কী তার সাথে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করব? মেয়ে দেখলেও উত্তেজনা অনুভব করি।

উত্তরঃ সমকামিতা সুস্থ যৌন আচরণ নয়। নিজেকে সংযত করুন। মেয়েদের সাথে স্বাভাবিক যৌন সম্পর্ক স্থাপন করাটা সুস্থতার লক্ষণ।

প্রশ্নঃ ‘Stop and go’ পদ্ধতি কি নারী সঙ্গমের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। যৌনসঙ্গমের মাঝে কি সঙ্গম থামিয়ে দেব? দেখেছি সঙ্গমের বিভিন্ন ভঙ্গিমাতে বীর্যপাত পিছিয়ে যায় এবং বিভিন্ন ভঙ্গিমাতে বিভিন্ন অনুভূতি পাওয়া যায়।

উত্তরঃ হ্যাঁ ঠিক বলেছেন। ওই পদ্ধতিতে যৌনসঙ্গমের মাঝে বারে বারে সঙ্গম থামাতে হয়। এক্ষেত্রে মেয়েটির সাথে আপনার আলাপ করে নেয়া প্রয়োজন, কারণ এতে তার সুখানুভূতি ব্যাহত হলে সম্পর্কচ্ছেদ হয়ে যেতে পারে। বিভিন্ন ভঙ্গিমা ব্যবহার করেও সঙ্গমকাল দীর্ঘ করা যায়।

প্রশ্নঃ হস্তমৈথুন করার পর ইদানীং আমার তীব্র মাথাব্যথা ও ঘাড় ব্যথা হচ্ছে। ব্যথা এত তীব্র যে চিৎকার করে কাঁদতে ইচ্ছা করে, কিভাবে মুক্তি পাব?

উত্তরঃ সম্ভবত আপনার মাইগ্রেন জাতীয় মাথাব্যথা হচ্ছে। যৌন উত্তেজনা যার কারণ। এরকম অনেকেরই হয়। আপনার চিকিৎসা প্রয়োজন। ডাক্তারের পরামর্শ নিন, যে ভঙ্গিতে আপনি হস্তমৈথুন করেন সেই ভঙ্গি পরিবর্তন করে দেখতে পারেন এতে আপনার মাংসপেশির চাপ কমে কি না। তাহলে মাথাব্যথা হবে না। ডাক্তার জানে, কমবেশি বেশিরভাগই হস্তমৈথুন করে, সুতরাং লজ্জা পাওয়ার মতো কিছু নেই।

প্রশ্নঃ একটা মেয়ের সাথে আমার সম্পর্ক হয়েছে। সে যৌনসঙ্গম করতে চাচ্ছে। আমার মনে হচ্ছে আমি পারব না। কী করা উচিত।

উত্তরঃ আপনার যৌনভীতি শুরু হয়েছে। বিষয়টা তাকে খুলে বলুন, সে আপনাকে সাহায্য করতে পারবে। একবার কাজটা না করলে বোঝা যাবে না আপনি পারবেন কি না। আগে চেষ্টা করুন, সম্ভব না হলে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

প্রশ্নঃ হস্তমৈথুন করার পর বীর্য মুখে নিয়ে দেখতে ইচ্ছা করে কেমন লাগে এটা কি নিরাপদ?

উত্তরঃ অনেকেই এ কাজ করে কিন্তু স্বীকার করে না। বীর্য মুখে নেয়াতে অসুখ হবে না, বীর্যের স্বাদ লোনা পানির মতো।

প্রশ্নঃ একজন খুব Sexy ও Hot মেয়ের সাথে আমার যৌন সম্পর্ক হয়েছে। তবে বীর্যপাতের সময় আমার পায়ের আঙ্গুল কুঁকড়ে এসেছে, এটা কি স্বাভাবিক?

উত্তরঃ হ্যাঁ। এটা স্বাভাবিক। বীর্যস্খলনের সময়ে অনেক সময় পায়ের মাংসপেশিতে টান ধরতে পারে, একে Charlie horse বলে।

প্রশ্নঃ কিছুদিন আগে আমার এক বুর বাড়িতে টিভি দেখছিলাম। সে সময় তার সুন্দরী আত্মীয়া ছাড়া ঘরে কেউ ছিল না। কিছুক্ষণ পরে আমাকে সে চুমু খেল। আমি তাকে চুমু খেলাম। সে আমার লিঙ্গ নিয়ে নাড়াচাড়া শুরু করল। আমি চরম উত্তেজনা অনুভব করলাম। তাকে একটানে শুইয়ে দিলাম এবং সঙ্গম করলাম। তখন আমার শরীরে জিন্স প্যান্ট ও জামা কাপড় সব ছিল। কাপড় পরা অবস্থায় সঙ্গমে চরম আনন্দ পেলাম। এরকম কি কেউ করে?

উত্তরঃ হ্যাঁ। অনেকেই এরকম করে এবং দারুণ তৃপ্তি অনুভব করে।

প্রশ্নঃ আমরা সন্তান নেব। আমার স্ত্রীর সাথে সঙ্গমের সময়ে তাকে চিৎ করে শুইয়ে দিলাম, সে তার দুই পা আমার ঘাড়ে তুলে দিল। এরপর আমি আমার লিঙ্গ তার যোনিপথের যতটা ভেতরে সম্ভব ঢুকিয়ে বীর্য ঢেলে দিলাম। এরপর সে একঘণ্টা শুয়ে ছিল। শুনেছি এতে শুক্রাণু দ্রুত ভেতরে পৌঁছায় এটা কি ঠিক?

উত্তরঃ সম্ভবত ঠিক।

প্রশ্নঃ সম্প্রতি আমার চুল রঙ করে খয়েরি করেছি। শুনেছি এই রঙে মেয়েরা আকৃষ্ট হয়।

উত্তরঃ কে কোন রঙে আকৃষ্ট হবে তা ব্যক্তিমত না নেয়া পর্যন্ত বোঝা যায় না। এখন দেখতে পাবেন কেউ আকৃষ্ট হচ্ছে কি না।

প্রশ্নঃ কোন ভঙ্গিতে বীর্যপাত সবচেয়ে আনন্দদায়ক? পেছন থেকে লিঙ্গ ঢুকিয়ে বীর্যপাত করতে আমার ভালো লাগে।

উত্তরঃ এটা ব্যক্তি পছন্দের ব্যাপার। আপনার যৌনসাথী যেভাবে আনন্দ পায় সে ভঙ্গি ব্যবহার করা ভালো।

প্রশ্নঃ যৌনসঙ্গমের সময় আমি বিভিন্ন শব্দ করতে পছন্দ করি। অন্যরা কি এরকম করে?

উত্তরঃ এক একজনের অভ্যাস এক এক রকম। তবে যৌনসঙ্গমের সময় অজান্তেই মুখ থেকে নানা শব্দ বের হয় এটাই স্বাভাবিক।

ঘরের কাজে সময় ব্যয় করলে যৌন জীবন মধুর হবে

দাম্পত্য’র মধুরতা যৌন মিলনে৷ পার্টনারের সঙ্গে যৌন মিলনের আনন্দ পেতে তাঁকে ঘরের কাজে আপনাকে সাহায্য করার কথা বলুন৷ কারণ সম্প্রতি একটা সমীক্ষাতে প্রমানিত হয়েছে যে সব দম্পতিরা ঘরের কাজে অতিরিক্ত সময় ব্যয় করেন তারা সহবাসের সময়ে অধিক পরিমাণে স্বচ্ছন্দ বোধ করেন৷

আমেরিকার মন্টক্লেয়ার ইউনিভার্সিটিতে এই নিয়ে একটি সমীক্ষা করা হয়েছিল৷ ঐ সমীক্ষাতে ৬৮৭৭ জন দম্পতি অংশ নিয়েছিলেন৷ তারা সকলেই রান্না থেকে শুরু করে কাপড় কাচা, ঘর পরিষ্কার করা, ঘরের যাবতীয় কাজ করেন৷

তারা সকলেই দৈহিক মিলনের ক্ষেত্রে অধিক সক্ষম বলে প্রমানিত হয়েছে৷ বয়সের ভার তাদের যৌন সম্পর্কে কোন প্রভাবে ফেলে নি৷

আপনি মা হচ্ছেন!



প্রত্যেক গর্ভবতী মা-ই নয় মাসের সুস্থ-স্বাভাবিক গর্ভাবস্থা প্রত্যাশা করেন। সুস্থ গর্ভাবস্থা মানে সুস্থ মা ও সুস্থ শিশু। এ জন্য গর্ভাবস্থায় কিছু নিয়ম মেনে চলা অবশ্যই প্রয়োজন।

গর্ভাবস্থায় নিন স্বাস্থ্যসেবা
মা ও শিশুর সুস্থতার জন্য গর্ভবতী মায়ের ‘প্রসবপূর্ব যত্ন’ করাতে হবে নিয়মিত। এ জন্য আদর্শ হচ্ছে, গর্ভাবস্থায় মোট ১৪ বার যেতে হবে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, নার্স বা অন্য কোনো অভিজ্ঞ স্বাস্থ্যকর্মীর কাছে। প্রথম সাত মাসে প্রতি মাসে একবার করে মোট সাতবার (প্রতি চার সপ্তাহে একবার), অষ্টম মাসে প্রতি দুই সপ্তাহে একবার করে মোট দুবার এবং পরে সন্তান প্রসব হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত প্রতি সপ্তাহে একবার করে মোট পাঁচবার (সর্বমোট এই ১৪ বার যাওয়াটা আদর্শ)। কিন্তু এটা অনেক সময়ই সম্ভব হয়ে ওঠে না। যদি তা সম্ভব না হয়, তা হলে কমপক্ষে তিনবার যেতেই হবে। প্রথম ২০ সপ্তাহের মধ্যে একবার, ৩২ সপ্তাহের সময় একবার এবং ৩৬ সপ্তাহের সময় একবার।

গর্ভবতী মায়ের ইতিহাস
চিকিৎসক বা স্বাস্থ্যকর্মীকে শেষ মাসিকের ইতিহাস জানাতে হবে। শেষ মাসিকের তারিখ থেকেই তাঁরা সন্তান হওয়ার সম্ভাব্য তারিখ নির্ধারণ করেন। পূর্ববর্তী গর্ভাবস্থা বা প্রসবকালীন ইতিহাসও বলতে হবে। সে হিসেবে স্বাভাবিকভাবে সন্তান প্রসব হবে, না কোনো অপারেশনের প্রয়োজন পড়বে; হাসপাতালে হবে, না বাড়িতে হবে, তার সিদ্ধান্ত নেবেন চিকিৎসক বা স্বাস্থ্যকর্মী। ধনুষ্টংকারের টিকা নেওয়া আছে কি না, সে খবরও দিতে হবে। টিকা না নিয়ে থাকলে নিতে হবে।

স্বাস্থ্য পরীক্ষা
শরীরের উচ্চতা ও ওজন ঠিক আছে কি না, রক্তশূন্যতা আছে কি না, উচ্চ রক্তচাপ আছে কি না—এসবই দেখা হয় ‘প্রসবপূর্ব যত্ন’তে। হাতে, পায়ে বা শরীরের অন্যান্য স্থানে পানি এসেছে কি না (প্রি-এক্লাম্পশিয়া), তা-ও পরীক্ষা করে দেখা হয় গর্ভাবস্থায়।

ল্যাবরেটরি পরীক্ষা
রক্তের গ্রুপ জেনে রাখা জরুরি। সিফিলিস, ডায়াবেটিস আছে কি না, তা আগেভাগেই পরীক্ষা করিয়ে নিলে সময়মতো চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হয়। গর্ভের ভ্রূণ ঠিকমতো বাড়ছে কি না, ভ্রূণের কোনো শারীরিক ত্রুটি আছে কি না, জরায়ুর ভেতর পানির পরিমাণ ঠিক আছে কি না, জরায়ুর ভেতর ফুলের অবস্থান কোথায়, এর অবস্থাই বা কেমন ইত্যাদি দেখার জন্য আলট্রাসনোগ্রাফি করাতে হয়।

উপদেশ
খাবার হোক স্বাস্থ্যকর
খাবারে থাকতে হবে একটু বাড়তি ক্যালরি। গর্ভের সন্তানের জন্য বাড়তি খাবার। কোষ্ঠকাঠিন্য যেন না হয়, সে জন্য খাবারে থাকতে হবে পর্যাপ্ত আঁশ। খাবারের আঁশ ডায়াবেটিসও প্রতিরোধ করবে। খাবারে থাকতে হবে প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও খনিজ লবণ। শাকসবজি, ফল-মূলে পাওয়া যাবে এগুলো। মাছ খাওয়া ভালো। মাছে আছে ওমেগা ৩ মেদাম্ল, যা শিশুর বিকাশে সহায়ক। যথেষ্ট পানিও পান করতে হবে প্রতিদিন।
বিশ্রাম নিন পরিমিত
একেবারে শুয়ে-বসে থাকাও নয়, আবার দিনভর হাড়ভাঙা খাটুনিও নয়। কাজের ফাঁকে চাই পর্যাপ্ত বিশ্রাম।
ব্যায়াম করুন নিয়মিত
দৈনন্দিন গৃহস্থালির কাজ চালিয়ে যেতে হবে স্বাভাবিকভাবেই। প্রতিদিন ২০ থেকে ৩০ মিনিট সময় হাঁটতে হবে। সপ্তাহে পাঁচ দিন কমপক্ষে।
ঘুম হতে হবে পর্যাপ্ত
দিনে রাতে সাত-আট ঘণ্টা। দুপুরে খাওয়ার পর হালকা ঘুম।
পোশাক হোক আরামদায়ক
সুতির ঢিলেঢালা পোশাকে ত্বক ও শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে রক্ত সরবরাহ থাকবে স্বাভাবিক। হাই হিল জুতো স্বাস্থ্যকর নয়। ফ্ল্যাট চটি ভালো। মেরুদণ্ডের স্বাভাবিক বক্রতা বজায় থাকবে। পিঠে, কোমরে ও পায়ের পেশিতে ব্যথা করবে না।
এড়িয়ে চলুন সিগারেটের ধোঁয়া
গর্ভাবস্থায় ধূমপান করলে গর্ভের সন্তান কম ওজনের হয়। পরোক্ষ ধূমপানেও একই ক্ষতি হয়। সুতরাং প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ধূমপান এড়িয়ে চলতে হবে।
পরিহার করুন প্রেসক্রিপশন ছাড়া ওষুধ
ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় গর্ভের সন্তানের শারীরিক ও মানসিক ক্ষতি হতে পারে। তাই রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ছাড়া কোনো ওষুধ সেবন করা যাবে না।

একটু-আধটু সমস্যা হলে ব্যবস্থা নিন নিজেই
বমি বমি ভাব বা বমি
বিশেষ করে, গর্ভাবস্থায় প্রথম তিন মাস দিনের শুরুতে বমি বমি ভাব হয় বা বমি হয়। এ সমস্যা হলে অল্প অল্প করে ঘন ঘন খাবার খেতে হবে। সকালে ঘুম থেকে উঠেই বিস্কুট, টোস্ট-জাতীয় শুকনো কিছু খাবার খেলেও উপকার পাওয়া যায়। তৈলাক্ত খাবার কম খেলেও উপকার পাওয়া যাবে। বমি খুব বেশি হলে বা সমস্যাটা তিন মাসের বেশি স্থায়ী হলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

বুক জ্বালা
গর্ভকালীন এসিডিটির জন্যও এ সমস্যাটা হতে পারে। এসিডিটি বা বুক জ্বালা হলেও অল্প অল্প করে ঘন ঘন খাবার খেতে হবে। তৈলাক্ত খাবার, ভাজা-পোড়া খাবার ও বেশি মসলাযুক্ত খাবার কম খেতে হবে। একসঙ্গে বেশি খাবার না খেলেও উপকার পাওয়া যায়। খাওয়ার সময় পানি কম পান করতে হবে। দুই খাবারের মধ্যবর্তী সময়ে বেশি বেশি পানি পান করতে হবে। খাওয়ার পরপরই উপুড় হওয়া বা বিছানায় শোয়া উচিত নয়। চিকিৎসকের পরামর্শমতো অ্যান্টাসিড-জাতীয় ওষুধ সেবন করা যেতে পারে।

কোষ্ঠকাঠিন্য
গর্ভকালীন কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে। কোষ্ঠকাঠিন্য যেন না হয়, সে জন্য প্রচুর পানি পান করতে হবে। দৈনিক অন্তত আট গ্লাস। আঁশ আছে এ রকম খাবার, যেমন—শাকসবজি, ফলমূল, বিচি-জাতীয় খাবার, ডাল, গমের আটা ইত্যাদি খেতে হবে বেশি বেশি। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া পায়খানা নরম করার জন্য কোনো ওষুধ ব্যবহার করা যাবে না।

স্তন ক্যানসার স্ক্রিনিং – প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ নির্ণয়ের উপায়



স্তন ক্যানসার বিশ্বব্যাপী মহিলাদের এক নম্বর ক্যানসার সমস্যা। একেবারে প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ নির্ণয় হলে এ রোগজনিত মৃত্যুর হার উল্লেখযোগ্যভাবে কমে আসে। প্রাথমিক পর্যায়ে এ রোগ নির্ণয়ের ব্যবস্থার নাম স্তন ক্যানসার স্ক্রিনিং। যখন স্তন ক্যানসারের কোনো চিহ্ন বা উপসর্গ থাকে না, তখন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে স্তনে ক্যানসারের চিহ্ন খুঁজে দেখা। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে স্তন রেখেই সফল চিকিৎসা সম্ভব হয়।

স্তন ক্যানসার স্ক্রিনিং কোন নারীদের জন্য
নারী হয়ে জন্মানো স্তন ক্যানসারের একটি ঝুঁকি। তবে সবাই সমান ঝুঁকিপূর্ণ নন। সাধারণত ২০ বছরের নিচে ঝুঁকি থাকে না বললেই চলে। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ঝুঁকি বাড়তে থাকে। ৫০ বছরের কাছাকাছি এলেই এ রোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়। অন্যান্য আরও ঝুঁকিপূর্ণ বিষয় বিবেচনায় নিয়ে কম ঝুঁকিপূর্ণ ও অতি ঝুঁকিপূর্ণ উভয় গ্রুপের নারীদের স্ক্রিনিং করানো উচিত। তবে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ নারীদের অপেক্ষাকৃত কম বয়স থেকে ও প্রতিবছরই স্তন ক্যানসার স্ক্রিনিং করা উচিত।

কম ঝুঁকিপূর্ণ নারী
 যাদের কোনো ধরনের উপসর্গ নেই।
 পরিবারের রক্ত সম্পর্কের আত্মীয় (মা, খালা, নানি, দাদি, কন্যা) কারও স্তন ক্যানসার হয়নি।
অথবা পরিবারের অন্য কারও ক্যানসার হওয়ারও ইতিহাস নেই। যেমন ডিম্বাশয় (ওভারি), কোলন ক্যানসার।
 ওজন স্বাভাবিক, নিয়মিত ব্যায়াম বা শারীরিক পরিশ্রম করার অভ্যাস।
 ১৮ মাস বা তারও বেশি দিন শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানো হলে।

অতি ঝুঁকিপূর্ণ নারী
 পরিবারের রক্ত সম্পর্কের আত্মীয় (মা, খালা, নানি, দাদি, কন্যা) কেউ স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত হলে, বিশেষ করে একাধিক ব্যক্তি স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার ইতিহাস থাকলে। অন্যান্য ক্যানসার হওয়ার ইতিহাস থাকলে।
 আগে স্তন ক্যানসার অথবা ক্যানসার পূর্বাবস্থা শনাক্ত হয়ে থাকলে।
 আগে ক্যানসারের জন্য বুকে রেডিওথেরাপি চিকিৎসাপ্রাপ্ত হলে।
 স্তনগ্রন্থির পরিমাণ অধিক হলে।
 অধিকতর মেদবহুল, অস্বাভাবিক শারীরিক ওজন, শারীরিক পরিশ্রম না করা হলে।
 অল্প বয়সে ঋতুস্রাব শুরু হওয়া ও বেশি বয়সে মেনোপজ হলে।
 কখনো সন্তান ধারণ না হলে।
 শিশুকে বুকের দুধ পান না করানো হলে।
 একটানা দীর্ঘদিন জন্ম নিয়ন্ত্রণ বড়ি সেবন অথবা মেনোপজের (মাসিক বন্ধ হয়ে যাওয়া) পর হরমোন থেরাপি নেওয়া হলে।

স্তন ক্যানসার স্ক্রিনিংয়ে কী কী ধরনের পরীক্ষা করানো হয়
১। ব্রেস্ট সেল্ফ এক্সামিনেশন (বিএসসি)
নিজের স্তন নিজে পরীক্ষা করতে শেখা এবং ২০ বছর বয়স থেকে প্রতি মাসে একবার নিজেকে নিজে পরীক্ষা করা। সারা জীবন তা চালিয়ে যাওয়া। এ পরীক্ষার লক্ষ্য নিজের স্তনের স্বাভাবিকতা বুঝতে পারা এবং কোনো অস্বাভাবিকতা দেখা দিলে যাতে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া যায়। যেমন কোনো চাকা অনুভব করা, ত্বক পুরু হয়ে যাওয়া, বৃন্ত থেকে রক্ত ক্ষরণ বা তরল নির্গত হওয়া ইত্যাদি।

২। ক্লিনিক্যাল ব্রেস্ট এক্সামিনেশন (সিবিসি)
প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত চিকিৎসক দ্বারা শারীরিক পরীক্ষা করানো। ২০ থেকে ৩৯ বছর বয়স পর্যন্ত তিন বছরে একবার এবং ৪০ বছর পার হলে প্রতিবছর একবার। এ পরীক্ষার পাশাপাশি চিকিৎসক প্রয়োজনে অন্যান্য পরীক্ষা করানোর উপদেশ দিয়ে থাকেন।
৩। ম্যামোগ্রাফি ও অন্যান্য রেডিওলজি এবং ইমেজিং পরীক্ষা। যেমন আলট্রাসনোগ্রাফি, এমআরআই। পরবর্তী সময়ে প্রয়োজন হলে অন্যান্য পরীক্ষা যেমন এফএনএসি (ফাইন নিডল এসপিরেশন) অর্থাৎ সূক্ষ্ম সুঁই ফুটিয়ে রস বের করে মাইক্রোস্কোপিক্যাল পরীক্ষা করে রোগ শনাক্ত করা।

ম্যামোগ্রাফি কী
ম্যামোগ্রাফি হলো স্তনের এক্স-রে। ম্যামোগ্রাফি মেশিন (বিশেষ ধরনের এক্স-রে মেশিন) দিয়ে এ পরীক্ষা করা হয়। এক্স-রে করতে ব্যবহার হয় তেজস্ক্রিয় রশ্মি। এটি স্তন ক্যানসার ঘটানোর জন্য একটি ক্ষতিকর উপাদান। তবে ম্যামোগ্রাফিতে খুব সামান্যই তেজস্ক্রিয় রশ্মি ব্যবহূত হয়। পঞ্চাশোর্ধ্ব ব্যক্তিদের যদি দুই-তিন বছর অন্তর স্ক্রিনিং ম্যামোগ্রাফি করানো হয় এবং প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ নির্ণয় হয়, তবে ক্ষতির চেয়ে লাভ বেশি হয় বলে বিভিন্ন গবেষণায় প্রমাণিত। তাই আন্তর্জাতিকভাবে ম্যামোগ্রাফি স্তন ক্যানসার স্ক্রিনিংয়ের একটি শক্তিশালী মাধ্যম হিসেবে বিবেচিত। রেডিওলজিস্টের তত্ত্বাবধানে মহিলা রেডিওলজি টেকনোলজিস্ট (ম্যামোগ্রাফিতে বিশেষভাবে ট্রেনিংপ্রাপ্ত) ম্যামোগ্রাফি মেশিন পরিচালনা করেন এবং রেডিওলজিস্ট ম্যামোগ্রাফি ফিল্মের রিপোর্ট প্রদান করেন। ম্যামোগ্রাফির সুফল পেতে হলে প্রয়োজন ভালো মেশিন, দক্ষ টেকনোলজিস্ট এবং ম্যামো-রিপোর্টিংয়ে বিশেষভাবে পারদর্শী রেডিওলজিস্ট।
সাধারণভাবে ৫০ বছর হওয়ামাত্রই ম্যামোগ্রাফি শুরু করা এবং সুস্থ-সবল দেহ বজায় থাকলে তিন বছর অন্তর তা ৭০ বছর বয়স পর্যন্ত চালিয়ে যাওয়া। উন্নত দেশের বিভিন্ন ক্যানসার সংগঠন লাখ লাখ নারীর ওপর দীর্ঘদিন ধরে এ ধরনের প্রোগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে। তবে কোনো কোনো সংগঠন ৪৭ থেকে ৭৩ বছর পর্যন্ত স্ক্রিনিং ম্যামোগ্রাফির জন্য পরামর্শ দিয়ে থাকে।
অতি ঝুঁকিপূর্ণ নারীদের ক্ষেত্রে ৪০ বছর পার হলেই স্ক্রিনিং ম্যামোগ্রাফি শুরু করা এবং প্রতিবছর একবার পরীক্ষা করা উচিত। তবে ৪০ বছরের কম বয়সীদের সাধারণত স্ক্রিনিং ম্যামোগ্রাফির পরামর্শ দেওয়া হয় না। সে ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ বা ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে অংশ নিয়ে স্ক্রিনিং ম্যামোগ্রাফি করা যেতে পারে। ৩০ বছরের নিচে স্ক্রিনিং ম্যামোগ্রাফি অনুমোদনযোগ্য নয়। অল্প বয়সী নারীর স্তনগ্রন্থি অত্যন্ত ঘন হয়ে থাকে। ম্যামোগ্রাফিতে কোনো ইমেজ বা ছবি থাকলে তা ঘন গ্রন্থির আড়ালে ঢাকা পড়ে যায়। রোগ শনাক্ত হয় না। অল্প বয়সী নারীদের অহেতুক ম্যামোগ্রাফি করা হলে স্তন ক্যানসারের ঝুঁকিও বেড়ে যায়। কারণ, ম্যামোগ্রাফি এক ধরনের তেজস্ক্রিয় রশ্মি। ঝুঁকিপূর্ণ অল্প বয়সী নারীদের জন্য আলট্রাসনোগ্রাফি, এমআরআই ম্যামোগ্রাফি করার জন্য পরামর্শ হতে পারে।

যৌনসঙ্গম

যৌনসঙ্গম বা মৈথুন এক ধরণের দৈহিক মিলন যা ঘটে স্ত্রীর জননাঙ্গে (যোনী) পুরুষের জননাঙ্গ (শিশ্ন) প্রবেশের মাধ্যমে। যেসব প্রাণী যৌন জননের মাধ্যমে বংশবৃদ্ধি করে তাদের সবাই যৌনসঙ্গমে পারঙ্গম। এর উদ্দেশ্য প্রজনন ও দৈহিক সুখ লাভ- এর যেকোন একটি বা উভয়টিই হতে পারে। সঙ্গম শেষে পুরুষের যখন রাগমোচন বা অরগ্যাজম ঘটে তখন তার জননাঙ্গ থেকে বীর্য নিঃসৃত হয়, যদিও বীর্যস্খলনের অন্য উপায়ও আছে (যেমন, হস্তমৈথুন)। প্রজননের উদ্দেশ্যে সঙ্গম করলে স্ত্রীর যোনীর ভেতর শিশ্ন থাকা অবস্থায়ই পুরুষের বীর্যস্খলন করতে হয়। এতে বীর্যের মধ্যে থাকা শুক্রাণু স্ত্রীর দেহে ইতিমধ্যে থাকা ডিম্বাণুর সাথে মিলিত হওয়ার সুযোগ পায়। শুক্রাণু ও ডিম্বাণুর মিলনের মাধ্যমে সৃষ্ট জাইগোটই সন্তান উৎপাদনের পথে প্রথম ধাপ। কিছু প্রাণীর ক্ষেত্রে স্ত্রীদেহের ভেতরেই সন্তান বেড়ে ওঠে এবং একসময় তার যোনীপথ দিয়েই সন্তানকে বের করে আনা যায়। তবে মাছের মত প্রাণীদের ক্ষেত্রে স্ত্রী ডিমটি আগেই বের করে দেয় যা ফুটে এক সময় বাচ্চা বের হয়। সকল স্তন্যপায়ী প্রাণীই যৌনসঙ্গম করে থাকে।[১]

তবে প্রজননের ইচ্ছা না থাকলে, পুরুষ স্ত্রীর যোনীর ভেতর বীর্য প্রবেশ করতে দেয় না। এর নানাবিধ উপায় রয়েছে: যেমন, বীর্যস্খলনের ঠিক আগে আগে শিশ্ন স্ত্রীর জননাঙ্গ থেকে বের করে আনা। তবে মানুষ কেবল আনন্দ ও সুখের জন্য যৌনসঙ্গমের আরও কিছু উপায় উদ্ভাবন করেছে, যেমন, পুরুষের জননাঙ্গে কনডম ব্যবহার, যাতে যোনীর ভেতর শিশ্ন থাকা অবস্থায় রাগমোচন ঘটলেও বীর্য স্ত্রীদেহে মিশতে না পারে। তাছাড়া স্ত্রী যদি নিয়মিত জন্মনিরোধক বড়ি বা পিল গ্রহণ করে তাহলে তার দেহে বীর্য মিশলেও সন্তানের জন্ম হয় না।

তবে যৌনসঙ্গম শব্দটি আরও কিছু ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। যেমন, পায়ুকাম যাতে এক যৌনসঙ্গীর পায়ুপথ দিয়ে অন্য যৌনসঙ্গী তার জননাঙ্গ বা অন্য কিছু প্রবেশ করায়, মুখমৈথুন যেক্ষেত্রে স্ত্রী বা পুরুষ জননাঙ্গের পরিবর্তে তার মুখ, জিভ, দাঁত বা গলা ব্যবহার করে তার সঙ্গীকে সুখ দিয়ে থাকে, অঙ্গুলিমৈথুন, হস্তমৈথুন, জননাঙ্গের বদলে ডিল্ডো বা এ ধরণের কোন বস্তু ব্যবহার ইত্যাদি। প্রজনন হতে পারে কেবল স্ত্রী-পুরুষ সঙ্গমের মাধ্যমে, এছাড়া শুধু আনন্দের জন্য সমকামীরা স্ত্রী-স্ত্রী বা পুরুষ-পুরুষ সঙ্গম করে থাকে। দুয়ের অধিক স্ত্রী-পুরুষের সম্মিলনেও মৈথুন হতে পারে, যাকে বলা হয় যৌথ মৈথুন বা গ্রুপ সেক্স। মৈথুনের মাধ্যমে একজনের দেহ থেকে অন্যের দেহে কিছু রোগ স্থানান্তরিত হতে পারে যে কারণে সকল মানুষকে নিরাপদ মৈথুন এর উপদেশ দেয়া হয়।

মানুষের ক্ষেত্রে মৈথুন সম্ভাব্য সবচেয়ে অন্তরঙ্গ ব্যবহার, এর মাধ্যমে পুরুষ ও নারী একে অপরের সবচেয়ে কাছাকাছি আসতে পারে। অনেকের জন্য এটাই আনন্দ ও সন্তুষ্টির সর্বোৎকৃষ্ট মাধ্যম এবং প্রেম ও ভালবাসার বহিঃপ্রকাশ। মৈথুনের এক পর্যায়ে সর্বোচ্চ আনন্দ লাভ হয়ে থাকে যাকে চরমানন্দ বা রাগমোচন (ইংরেজিতে অরগ্যাজম) বলা হয়। রাগমোচন কয়েক সেকেন্ড থেকে কয়েক মিনিট পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। এতে আনন্দের সাথে মিশে থাকে দেহ ও মনের এক ধরণের নিরুদ্বেগ শৈথিল্য। পুরুষের ক্ষেত্রে বীর্যস্খলনের সময়ই রাগমোচন লাভ হয়, এর পাশাপাশি পেশীর ক্রিয়ার কারণে তার শিশ্ন কয়েকবার কেঁপে ওঠে এবং অণ্ডকোষ শক্ত হয়ে একটু উপরে উঠে আসে। অধিকাংশ পুরুষের ক্ষেত্রেই রাগমোচনের পর পর আবার মৈথুন করা সম্ভব না, সঙ্গমশক্তি পুনরুদ্ধারের জন্য কিছুটা সময় লাগে। স্ত্রীর ক্ষেত্রে ইউটেরিন ও যোনীর দেয়ালের পেশীগুলোর মুহুর্মুহু সংকোচনের মাধ্যমে রাগমোচন ঘটে। এটা ক্ষেত্রবিশেষে একসাথে কয়েকবার হতে পারে আবার সামান্য সময়ের ব্যবধানে হতে পারে। অনেক স্ত্রীর ক্ষেত্রে পুরো দেহব্যাপী অনেকক্ষণের জন্য রাগমোচন ঘটতে পারে। পুরুষের চেয়ে নারীর রাগমোচন অনেক দীর্ঘস্থায়ী হয়।[২]

জরায়ুমুখের ক্যানসার ও এই রোগের প্রতিরোধ






জরায়ুমুখের ক্যানসার আজও বাংলাদেশের নারীদের গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা। নারী ক্যানসার রোগীদের ২৫ শতাংশ অর্থাৎ প্রতি চারজনে একজন এ রোগে আক্রান্ত।

উন্নত দেশে কীভাবে এ রোগ নিয়ন্ত্রণে এসেছে?
নারীশিক্ষার প্রসার, উন্নত জীবনযাপন, স্বাস্থ্যসচেতনতা সর্বোপরি যুগান্তকারী ‘পেপস স্মেয়ার টেস্ট’ আবিষ্কার। এর ফলে ওই সব দেশে এ রোগের প্রকোপ কমে এসেছে এবং এ রোগজনিত মৃত্যুর হার উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গিয়েছে।

পেপস স্মেয়ার টেস্ট কী?
এটি একটি সহজ পরীক্ষা। জরায়ুমুখ থেকে রস নিয়ে অণুবীক্ষণযন্ত্র দিয়ে পরীক্ষা। এ পরীক্ষা দিয়ে ক্যানসার, ক্যানসার হওয়ার পূর্বাবস্থা ও জরায়ুমুখের অন্যান্য রোগ যেমন প্রদাহ (ইনফ্লামেশন) শনাক্ত করা যায়। এতে কোনো ব্যথা হয় না। এই টেস্টের খরচও কম। সাধারণত বিবাহিত নারীদের ২১ বছরের পর থেকে এ টেস্ট শুরু করা যেতে পারে। ৩০ থেকে ৬৪ বছর বয়স পর্যন্ত প্রতি তিন বছর পর পর এই টেস্ট করা উচিত। তবে চিকিৎসকের পরামর্শে এ রুটিনের পরিবর্তন হতে পারে।

জরায়ুমুখের ক্যানসার
খুব ধীরে ধীরে সৃষ্টি হওয়া এক রোগ। এক যুগেরও বেশি সময় ধরে জরায়ুমুখের স্বাভাবিক কোষ পরিবর্তিত হতে থাকে। একসময় তা ক্যানসারে রূপ নেয়। ২০ বছরের কম বয়সীদের নিচে এ রোগ হয় না। এ রোগে আক্রান্তরা সাধারণত ৩৫ থেকে ৫৫ বছর বয়সী হয়ে থাকেন। ৬০ বছরের পরও এ রোগ হতে পারে, তবে তাঁদের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম। উপযুক্ত চিকিৎসায় এ রোগ শতভাগ নিরাময় করা যায়।

হিউম্যান পেপিলোমা ভাইরাস (এইচপিভি)
হিউম্যান পেপিলোমা বা এইচপি ভাইরাস জরায়ুমুখের ক্যানসারের একটি অন্যতম কারণ, তবে একমাত্র নয়। যৌন সংযোগে এর সংক্রমণ ঘটে। এযাবৎ ১০০ ধরনের এইচপি ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এদের বেশির ভাগই জরায়ু ক্যানসারের জন্য তেমন ঝুঁকিপূর্ণ নয়। এইচপিভি-১৬, এইচপিভি ১৮, এইচপিভি-৬, এইচপিভি-১১ সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। তবে হিউম্যান পেপিলোমা ভাইরাসের আক্রমণ হলেই যে ক্যানসারের সৃষ্টি হয়, তা নয়। স্বাভাবিক জীবনযাপনে অভ্যস্ত নারীদের জরায়ু প্রায়ই এইচপি ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হয়ে থাকে। এতে কোনো উপসর্গ থাকে না বা শারীরিক পরীক্ষায় কোনো চিহ্ন বা ক্ষত পাওয়া যায় না। এর জন্য কোনো চিকিৎসারও প্রয়োজন নেই। শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতাবলে ১৮-২৪ মাসের মধ্যে জরায়ু প্রায় সব এইচপি ভাইরাস থেকে মুক্ত হয়ে যায়। জরায়ুতে এইচপি ভাইরাস দীর্ঘদিন স্থায়ী হলে, জরায়ু কোষে পরিবর্তনের সূচনা করে। একসময় তা ক্যানসারে রূপ নেয়। এইচপিভির প্রতিষেধক টিকা এইচপিভি-১৬, এইচপিভি-১৮, এইচপিভি-৬, এইচপিভি-১১-এর প্রতিষেধক টিকা আবিষ্কৃত হয়েছে।

কত বয়সে এ টিকা দিতে হবে?
এ টিকা এইচপিভির প্রতিষেধক। তাই এ ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার আগেই টিকা দিতে হয়। আমেরিকার ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ) নিয়মানুযায়ী নয় থেকে ২৫ বছর বয়সে এ টিকা কার্যকর হয়। গর্ভাবস্থায় এ টিকা প্রদান এখনো অনুমোদন পায়নি। এইচপিভি ইনফেকশন হয়ে যাওয়ার পর বা ক্যানসার হয়ে যাওয়ার পর টিকা দিলে কোনো কাজে আসে না। আর এ টিকা গ্রহণকারীকেও নিয়মিত পেপস স্মেয়ার টেস্টে অংশ নিতে হবে।

জরায়ুমুখের ক্যানসার প্রতিরোধে নিম্নলিখিত বিষয়গুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ

 বাল্যবিবাহ বন্ধ করতে বাংলাদেশের প্রচলিত আইন (মেয়েদের বিয়ের বয়স ১৮ বছর) মেনে চলা।
 অধিক সন্তান নেওয়া থেকে বিরত থাকা।
 ধূমপান বন্ধ করতে হবে। অন্যের ধূমপানে যাতে নিজের ক্ষতি না হয়, সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে, অর্থাৎ পরোক্ষ ধূমপানের শিকার না হওয়া।
 বন্ধ করতে হবে পানের সঙ্গে জর্দা ও সাদা পাতা খাওয়া, দাঁতের গোড়ায় গুল (তামাকের গুঁড়া) লাগানো।
 সুষম খাবার খেতে হবে। প্রতিদিন তিন-চারবার ফল, শাকসবজি ও তরকারি খেতে হবে।
 পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন, স্বাস্থ্যসম্মত ও সুশৃঙ্খল জীবনযাপন করা। সামাজিক অনুশাসন মেনে চলা।
 নিয়মিত পেপস স্মেয়ার টেস্টে অংশ নেওয়া।

উল্লিখিত বিষয়গুলো বেশি বেশি প্রচার করলে এবং ঘরে ঘরে এসব তথ্য পৌঁছে দিতে পারলে উন্নত দেশের মতো বাংলাদেশেও জরায়ুমুখের ক্যানসার এবং এ ক্যানসারজনিত মৃত্যুর হার উল্লেখযোগ্যভাবে কমে আসবে। এর সঙ্গে যদি সঠিকভাবে এইচপিভি টিকা দেওয়া যায়, তাহলে এ রোগ প্রতিকারে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

স্তন ক্যানসার : চাই সচেতনতা ও নতুন পদক্ষেপ



নারী হয়ে জন্ম নেওয়াই স্তন ক্যানসারের একটি ঝুঁকি। তাই প্রত্যেক নারীই স্তন ক্যানসারের ঝুঁকির মধ্যে বসবাস করেন। বিশ্বে প্রতি ১৬ জন নারীর একজনের জীবনের যেকোনো সময় স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা আছে। উন্নত বিশ্বে তো বটেই, বাংলাদেশের নারীরাও এই ঝুঁকির বাইরে নন। তাই এখনই সময় সচেতন হওয়ার ও রোগ প্রতিরোধের। আর অন্য সব রোগের মতোই এখানেও সবচেয়ে বড় সমস্যাটি হলো, দেরিতে রোগ শনাক্ত হওয়া এবং এ কারণে চিকিৎসা গ্রহণে পিছিয়ে পড়া। তাই বিশ্বজুড়ে গড়ে উঠেছে অত্যাধুনিক স্ক্রিনিং সিস্টেম। গড়ে উঠছে একই সেন্টারে একাধিক সেবা মেলে এমন মাল্টিডিসিপ্লিনারি ডায়াগনস্টিক টিম, যেখানে একাত্ম হবেন রেডিওলজিস্ট, প্যাথলজিস্ট, ব্রেস্ট অনকোলজিস্ট, ব্রেস্ট সার্জন, রেডিওথেরাপিস্ট—সবাই। গড়ে উঠেছে নারীদের জন্য ভয়ানক এই ঘাতককে রোখার ও এর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য সুনির্দিষ্ট নীতিমালা, গাইডলাইন ও সরকারি আইনকানুন। আর যথারীতি এখানেও আমরা যথেষ্ট পরিমাণেই পিছিয়ে।

চাই দ্রুত ও সঠিক রোগনির্ণয়
দ্রুত ও সময়ানুগ রোগনির্ণয়ে সফলতাই স্তন ক্যানসার চিকিৎসার মূল চাবিকাঠি। এ জন্য সবার আগে চাই নারীর সচেতনতা। ৩৫ বছর পার হয়ে গেলেই নিজের স্তন সম্পর্কে সচেতন হতে হবে প্রত্যেক নারীকে। নিজেকে নিজে পরীক্ষা করা এবং স্তন ক্যানসারের লক্ষণগুলো সম্পর্কে সম্যক অবহিত থাকা হচ্ছে এই সচেতনতার প্রথম ধাপ। জেনে নেওয়া দরকার স্তন ক্যানসারের ঝুঁকিগুলো সম্পর্কেও। পরিবারে কারও স্তন ক্যানসারের ইতিহাস, অত্যধিক ওজন, মন্দ খাদ্যাভ্যাস, হরমোন ট্যাবলেট সেবনের ইতিহাস, মাসিকের ইতিহাস—এগুলো জানা জরুরি। এর আগে স্তনে কোনো সমস্যা হয়েছিল কি না বা কোনো পরীক্ষা, যেমন—ম্যামোগ্রাফি করা হয়েছিল কি না। এগুলো গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দেয়। এরপর দরকার একটি সার্বিক ক্লিনিক্যাল অ্যাসেসমেন্ট। স্তনে যেকোনো সমস্যা বা সন্দেহজনক পরিবর্তনে প্রথমেই শরণাপন্ন হতে হবে একজন অভিজ্ঞ চিকিৎসকের। তিনি পূর্ণ ইতিহাস জানার পাশাপাশি আপনাকে বসিয়ে এবং শুইয়ে দুবার পরিপূর্ণভাবে দুটি স্তন ও দুটি বগল পরীক্ষা করবেন। যেকোনো সন্দেহজনক পরিবর্তন দেখলে তিনি শরণাপন্ন হবেন ল্যাবরেটরি পরীক্ষার।

এক. প্রথমেই আসে ব্রেস্ট ইমেজিং। প্রাথমিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার মধ্যে ম্যামোগ্রাফি ও আলট্রাসাউন্ড—এই দুটি গুরুত্বপূর্ণ। ম্যামোগ্রাফি হচ্ছে স্তনের এক ধরনের বিশেষ এক্স-রে, যাতে সচরাচর ব্যবহূত এক্স-রের তুলনায় কম তেজস্ক্রিয় রশ্মি ব্যবহার করা হয়। আন্তর্জাতিকভাবে ম্যামোগ্রাফি স্তন ক্যানসারের জন্য একটি শক্তিশালী ও বহুল ব্যবহূত স্ক্রিনিং পদ্ধতি হিসেবে স্বীকৃত। ৪০-পরবর্তী নারীদের নিয়মিত বার্ষিক ম্যামোগ্রাফির আওতায় আনা হয়েছে অনেক দেশে। তবে কম বয়সী নারী, যাঁদের স্তনগ্রন্থি আঁটোসাঁটো থাকে এবং গর্ভবতী ও স্তন্যদানকারী মা, যাঁদের তেজস্ক্রিয় রশ্মি ব্যবহারে বিধিনিষেধ আছে, তাঁদের জন্য ম্যামোগ্রাফির বদলে আলট্রাসাউন্ড শ্রেয়তর। কেননা, এতে তেজস্ক্রিয় রশ্মি ব্যবহার করা হয় না। তবে সন্দেহজনক পরিস্থিতিতে ৩৫-ঊর্ধ্ব নারীদের জন্য একই সঙ্গে ম্যামোগ্রাফি ও আলট্রাসাউন্ড সবচেয়ে ভালো ধারণা দিতে সক্ষম। তবে লক্ষ রাখবেন, দুটি পরীক্ষাই যেন একই সময়ে বা কাছাকাছি সময়ে করা হয়, যা তুলনাযোগ্য হতে পারে। স্তনের জন্য হাই ফ্রিকোয়েন্সি লিনিয়ার প্রোব আলট্রাসাউন্ড রোগনির্ণয়ে বেশি কার্যকর।
দুই. বায়োপসি বিভিন্ন ধরনের হয়। চাকা বা পিণ্ড কত বড় ও কোথায় অবস্থিত, তার ওপর নির্ভর করে কোনটি ব্যবহার করা হবে। যেমন—কোর বায়োপসি হচ্ছে এমন একটি আধুনিক পদ্ধতি, যেখানে একটি সূক্ষ্ম সুচের (নিডল গান) মাধ্যমে চাকা বা পিণ্ড থেকে খানিকটা টিস্যু এনে দেখা হয় তার অস্বাভাবিকতা। সময় লাগে ১৫ মিনিট। এ সময় নির্ভুল জায়গায় পৌঁছাতে আলট্রাসাউন্ডের সাহায্য নেওয়া যেতে পারে। অপরদিকে কোনো চাকা চামড়ার বা স্তনবৃন্তের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে আটকে থাকলে বা চামড়ায় কোনো ক্ষত বা ঘা থাকলে পাঞ্চ বায়োপসি করতে হয়। একজন দক্ষ প্যাথলজিস্ট এই বায়োপসি রিপোর্টটি করার সময় এক থেকে পাঁচ পর্যন্ত মাত্রা বা স্কেল ব্যবহার করেন। রেডিওলজিস্টও একই সঙ্গে তাঁর ম্যামোগ্রাফি ও আলট্রাসাউন্ডের রিপোর্টের ক্ষেত্রে মাত্রা বা স্কেল ব্যবহার করবেন। আর যে চিকিৎসক রোগীকে দেখেছেন, তাঁর তো নিজস্ব ক্লিনিক্যাল অ্যাসেসমেন্ট আছেই। এই ত্রয়ী বিশেষজ্ঞ অবশেষে সামগ্রিক বিবেচনায় সিদ্ধান্ত নেবেন রোগটি আসলে কী, তা কোন পর্যায়ে আছে এবং কোন ধরনের চিকিৎসা রোগীর প্রয়োজন। চিকিৎসকদের মতামতে গরমিল থাকলে প্রয়োজনে তাঁরা নিজেদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কোনো পরীক্ষার পুনরাবৃত্তিও করতে পারেন বা আরও আধুনিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার সাহায্য নিতে পারেন। বিশ্বে স্তন ক্যানসার নির্ণয়ের এই যুগপৎ প্রচেষ্টার নাম ট্রিপল অ্যাসেসমেন্ট বা ত্রয়ী পর্যবেক্ষণ নীতিমালা।

স্তনের সার্জারি: নতুন দিগন্ত
যদি ক্যানসার ধরা পড়ে, তবে তা স্তনের কতটুকু দখল করে আছে, অন্য স্তন বা আশেপাশের গ্রন্থিগুলোর অবস্থা কী, কতটুকু ক্ষতি হয়েছে এবং টিউমারের নিরাপদ সীমানা কতটুকু—এসব জটিল বিষয় বিবেচনায় এনে সার্জারির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়ে থাকে। এত দিন স্তনের সার্জারি বলতে মাসটেকটমি (সম্পূর্ণ স্তন অপসারণ), র‌্যাডিকাল মাসটেকটমি (স্তনসহ গ্রন্থিগুলোর অপসারণ), ব্রেস্ট কনসার্ভি সার্জারি (স্তন সংরক্ষণ সার্জারি) প্রভৃতিকেই বোঝাত। কিন্তু এখন আধুনিক বিশ্বে চলে এসেছে অনকোপ্লাস্টিক টেকনিক, যার মাধ্যমে অকারণ বিকৃতি না করে, এমনকি তিন থেকে পাঁচ সেন্টিমিটার আকারের টিউমারও নিরাপদে স্তন সংরক্ষণ করেই অপসারণ করা সম্ভব। এ ছাড়া সার্জারি ও রেডিওথেরাপির পর বিকৃতি রোধ করতে বলিউম রিপ্লেসমেন্ট সার্জারির সাহায্য নেওয়া হয়। তবে আধুনিক অনকোপ্লাস্টিক টেকনিক একই সঙ্গে ক্যানসার অপসারণ ও রিকনস্ট্রাকশন বা বিকৃতি রোধের সুযোগ এনে দিয়েছে।

চাই পদক্ষেপ
সংকোচ ও অবহেলা নারীকে নিজের স্তন বিষয়ে কুণ্ঠিত করে রাখে। নিজের সমস্যাগুলো গোপন করা, প্রকাশ করতে দেরি করা বা প্রকাশ করলেও তা পরিবার ও পারিপার্শ্বিক ব্যবস্থায় আমলে না আসার চক্র নারীকে ঠেলে দেয় নিশ্চিত মৃত্যুর দিকে। যে রোগের চিকিৎসা আশাপ্রদ ও সহজলভ্য, সে রোগটি ভয়ংকর ঘাতকরূপে দেখা দেয়। তাই স্তন ক্যানসার ঠেকানোর প্রথম পদক্ষেপই হলো সচেতনতা। নারীরা নিজের সম্পর্কে নিজে সচেতন হোন, পরিবারের নারী সম্পর্কে অন্য সবাই সচেতন হোন, সর্বোপরি দেশের সমাজ ও রাষ্ট্রব্যবস্থা নারীর সুস্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা বিষয়ে সচেতন হোক—এটাই আমাদের আশা।

জেনে নিন কখন সাবধান হবেন

স্তনে কোনো চাকা বা পিণ্ড দেখা দিলে:
 গোসলের সময় মাসে অন্তত একবার হাত দিয়ে স্তন ও বগল পরীক্ষা করার সময় যদি হাতে কোনো চাকা অনুভব করা যায়, যা আগে কখনো ছিল না।
 এর আগে স্তনে টিউমারের চিকিৎসা হয়েছে—এমন কারও নতুন করে আবার কোথাও চাকা দেখা দিলে।
 চাকাটি খুব দ্রুত বড় হতে থাকলে।
 চাকাটি যদি স্তনের চামড়া বা স্তনবৃন্তের সঙ্গে ঘনভাবে সন্নিবেশিত থাকে।
 দুই স্তনের আকার ও আকৃতিতে অস্বাভাবিক গরমিল দেখা দিলে।
 পর পর দুটি মাসিকের পরও স্তনের চাকা চাকা ভাব অনুভূত হতে থাকলে।
 স্তনের সিস্ট ঘন ঘন দেখা দিলে।
 ফোঁড়া বারবার হতে থাকলে।

স্তনে ব্যথা
 শুধু ব্যথা কোনো দুশ্চিন্তার বিষয় নয়, কিন্তু এর সঙ্গে চাকা, বিকৃতি বা যেকোনো ধরনের অস্বাভাবিকতা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ।
 মেনোপজের পর কোনো নারীর এক পাশে অস্বাভাবিক ও স্থায়ী ব্যথা।
 যে তীব্র ব্যথা সাপোর্টিভ ব্রা বা ব্যথানাশক খেলেও দূর হচ্ছে না।

স্তনবৃন্তের অস্বাভাবিকতা
 স্তনবৃন্ত থেকে রক্তক্ষরণ।
 দীর্ঘস্থায়ী অ্যাকজিমা বা ক্ষত।
 স্তনবৃন্ত ভেতর দিকে ঢুকে যাওয়া, দেবে যাওয়া বা এক পাশে সরে যাওয়া।
 যেকোনো বয়সে বৃন্ত থেকে নিঃসৃত ক্ষরণ সর্বদা কাপড়ে লেগে থাকা।

বগলের অস্বাভাবিকতা
 বগলে কোনো চাকা বা পিণ্ড অনুভূত হওয়া।

বর্তমান যুগে বেশীর ভাগ পুরুষের মধ্যে একটা সমস্যা বেশ প্রকট হয়ে উঠছে৷ দিন যত যাচ্ছে পুরুষের মধ্যে নপুংসকতা বৃদ্ধি পাচ্ছে৷ বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পুরুষের যৌণ ইচ্ছা ক্রমশঃ কমে যাচ্ছে৷ কাজেই আপনার যৌন চাহিদা কমে যাওয়ার আগে থেকে আপনি সচেতন হয়ে যান৷ জেনে নিন কেন আপনার মধ্যে থেকে এই চাহিদা ক্রমঃ ক্ষয়মান৷

এই কারণে ডাক্তারের কাছে যেতে কুন্ঠিত বোধ করছেন? তবে চিন্তা করবেন না কারণ এর চিকিত্সা আপনি এখন আপনার বাড়িতেও করতে পারেন৷ আর আপনি একবার এই সমস্যার সন্মুখীন হলে পরবর্তী সম্পূর্ণ জীবন আপনাকে এভাবে কাটাতে হবে এমন কোন আশঙ্কাতে আপনি থাকবেন না৷

হোম রেমেডি পুরুষের এই সমস্যা সমাধানের জন্য এগিয়ে এসেছে৷ তারা যাতে আবার তাদের পূর্ণ যৌন ইচ্ছা ফিরে পায় তার উপায় বার করেছে হোম রেমেডি৷ যাদের মধ্যে এই অসুবিধা সবে মাত্র দেখা দিয়েছে তাদের ক্ষত্রে হোম রেমেডি কার্যকরী হতে পারে৷ কিছু কিছু ক্ষেত্রে হোম রেমেডি দ্বারা চিকিত্সা করা যায় কিন্তু সবক্ষেত্রে হোম রেমেডি প্রযোজ্য নয়৷

এবার আসুন জানা যাক যৌন অক্ষমতার প্রথম ধাপের চিকিত্সাতে দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহার্য কিকি সামগ্র্রী কাজে লাগতে পারে বা তা ব্যবহারে কি উপকার সাধিত হয়–

রসুন :
যৌন অক্ষমতার ক্ষেত্রে রসুন খুব ভালো ফল দিয়ে থাকে৷ রসুন কে ‘গরীবের পেনিসিলিন’ বলা হয়৷ কারণ এটি অ্যান্টিসেপ্টিক এবং immune booster হিসাবে কাজ করে আর এটি অতিঅ সহজলভ্য সব্জী যা আমারা প্রায় প্রতিনিয়্ত খাদ্য হিসাবে গ্রহন করে থকি৷ আপনার যৌন ইচ্ছা ফিরে আনার ক্ষেত্রে এর ব্যবহার খুবই কার্যকরী৷ কোন রোগের কারণে বা দুর্ঘটনায় আপনার যৌন ইচ্ছা কমে গেলে এটি আপনাকে তা পুনরায় ফিরে পেতে সাহায্য করে৷এছাড়া যদি কোন ব্যক্তির যৌন ইচ্ছা খুব বেশী হয় বা তা মাত্রাতিরিক্ত হয় যার অত্যধিক প্রয়োগ তার নার্ভাস সিস্টেমের ক্ষতি করতে পারে এমন ক্ষেত্রে ও রসুন খুব ই কার্যকরী৷

প্রতিদিন দু থেকে তিনটি রসুনের কোয়া কাঁচা অবস্থায় চিবিয়ে খান৷ এতে আপনার যৌন ইচ্ছা কমে গিয়ে থাকলে তা বৃদ্ধি পাবে৷ এ ছাড়া গমের তৈরি রুটির সঙ্গে রসুন মিশিয়ে খেলে তা আপনার শরীরে স্পার্ম উত্পাদনের মাত্রা বাড়ায় এবং সুস্থ স্পার্ম তৈরিতে এটি সাহায্য করে৷

পেঁয়াজ :
কাম-উত্তেজক ও কামনা বৃদ্ধিকারী হিসাবে পেঁয়াজ বহুদিন থেকে ই ব্যবহূত হয়ে আসছে৷ কিন্তু এটি কিভাবে এই বিষয়ে কার্যকরী তা এখন ও পর্যন্ত সঠিক ভাবে জানা যায় নি৷

সাদা পেঁয়াজ পিষে নিয়ে তাকে মাখনের মধ্যে ভালো করে ভেঁজে নিয়ে তা প্রতিদিন মধুর সঙ্গে খেলে তা থেকে উপকার পাওয়া যায়৷ কিন্তু একটি বিষয় মনে রাখবেন, এটি খাওয়ার আগে ঘণ্টা দুয়েক সময় আপনার পেট খালি রাখবেন৷ এইভাবে প্রতিদিন খেলে স্খলন, শীঘ্রপতন বা ঘুমের মধ্যে ধাতুপতন (যাকে এক কথায় spermatorrhea বলা হয়) ইত্যাদি সমস্যার সমাধান হওয়া সম্ভব৷

এছাড়া পেঁয়াজের রসের সঙ্গে কালো খোসা সমেত বিউলির ডালের গুঁড়ো সাত দিন পর্যন্ত ভিজিয়ে রেখে তাকে শুকিয়ে নিন৷ এঅটির নিয়্মিত ব্যবহার আপনার কাম-উত্তেজনা বজায় রাখবে এবং শারীরিক মিলনকালীন সুদৃঢ়তা বজায় রাখবে৷

গাজর :
150গ্রাম গাজর কুঁচি এক টেবিল চামচ মধু এবং হাফ-বয়েল ডিমের সঙ্গে মিশিয়ে দুমাস খেলে আপনার শারীরিক এই অক্ষমতা কম হতে পারে৷

কাজেই এখন আর দুধ্চিন্তা করবেন না৷ সমস্যার একেবারে প্রথম ধাপে আপনি বাড়িতে এই পদ্ধতি গুলি মেনে চলে দেখুন হয়তঃ প্রাথমিক ধাপে এই সমস্যার সমাধান হতে পারে৷

পুরুষের স্বাস্থ্য: ১০টি স্বাস্থ্যঝুঁকি



পুরুষের স্বাস্থ্যের যে বড় ঝুঁকি রয়েছে, এগুলোর সবই প্রতিরোধ করা যায়। দীর্ঘ, সুস্থ জীবনের জন্য জানা চাই:
মাত্র ১০টি স্বাস্থ্যঝুঁকি সামলালেই হলো। বিখ্যাত সংস্থা সিডিসি এবং আরও কয়েকটি স্বাস্থ্য সংস্থার পরিসংখ্যান থেকে জানা গেল।

১. হূদরোগ
পুরুষের স্বাস্থ্যঝুঁকির প্রধান ঝুঁকি তো বটেই। আর স্বাস্থ্যকর জীবন পছন্দ মানলে হূদস্বাস্থ্য ভালো থাকবে অবশ্যই।
 ধূমপান করা যাবে না। তামাক, জর্দা, গুল চিবানো চলবে না। কেউ ধূমপান যদি করে, তার পাশে থাকা যাবে না। বারণ করতে ব্যর্থ হলে দূরে সরে যেতে হবে।  স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে। প্রচুর শাকসবজি, টাটকা ফল, গোটা শস্যদানা, আঁশ ও মাছ। যেসব খাবারে চর্বি বেশি, নুন বেশি সেসব খাবার বর্জন করা ভালো।  রক্তে যদি থাকে উঁচুমান কোলেস্টেরল, থাকে যদি উচ্চরক্তচাপ তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শমতো চিকিৎসা নিতে হবে।  প্রতিদিন জীবনযাপনের অংশ হবে শরীরচর্চা।  স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখতে হবে।
 মদ্যপান করে থাকলে বর্জন করতে হবে। ডায়াবেটিস যদি থাকে, তাহলে রক্তের সুগার মান বজায় রাখতে হবে।
 মানসিক চাপকে মোকাবিলা করতে হবে।

২. ক্যানসার
পুরুষের মধ্যে ক্যানসারের কারণে যাদের মৃত্যু হয়, শীর্ষে রয়েছে ফুসফুসের ক্যানসার। আমেরিকান ক্যানসার সোসাইটির অভিমত: এর কারণ হলো ধূমপান। এরপর রয়েছে প্রোস্টেট ক্যানসার ও কোলেস্টেরল ক্যানসার।
ক্যানসার প্রতিরোধ করতে হলে—
 ধূমপান করা যাবে না। তামাকপাতা, জর্দা, গুল চিবানো যাবে না।
 পাশে কেউ ধূমপান করলে দূরে সরে যেতে হবে।  দৈনন্দিন জীবনে শরীরচর্চা থাকতেই হবে।
 স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখতে হবে।  ফল ও শাকসবজিসমৃদ্ধ স্বাস্থ্যকর আহার। এড়িয়ে যেতে হবে চর্বিবহুল খাবার।  কড়া রোদে বেশিক্ষণ থাকা ঠিক নয়। ছাতা ও মাথাল ব্যবহার, সানস্ক্রিন ব্যবহার করা উচিত।  মদ্যপান বর্জন করতে হবে।  নিয়মিত ক্যানসার স্ক্রিনিংয়ের জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ ও সাহায্য নিতে হবে।
 ক্যানসার জনক বস্তু অর্থাৎ কার্সিনোজেন যেমন, রেড়ন, এসবেসটস বিকিরণ ও বায়ুদূষণের মুখোমুখি যাতে না হতে হয়, সে রকম ব্যবস্থা করা।

৩. আঘাত
সেন্টার ফর ডিজিজ কনট্রোল সিডিসির মত অনুযায়ী পুরুষের মধ্যে মারাত্মক দুর্ঘটনার প্রধান কারণ হলো, মোটরগাড়ি দুর্ঘটনা। ভয়ানক দুর্ঘটনা এড়াতে হলে—
 গাড়িতে সিটবেল্ট পরতে হবে।  গাড়ি চালানোর সময় গতিসীমা মেনে চলা উচিত।  মদ বা অন্য কোনো নেশা করে গাড়ি চালানো উচিত নয়।  ঘুম ঘুম চোখে গাড়ি চালানো ঠিক নয়।
মারাত্মক দুর্ঘটনার অন্যান্য বড় কারণ হলো, পতন, পিছলে পড়ে যাওয়া, বিষক্রিয়া। বায়ু চলাচল হয় এমন স্থানে রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহার করা উচিত, স্নানঘরে পিছলে যায় না এমন ম্যাট ব্যবহার করা উচিত।
৪. স্ট্রোক
স্ট্রোকের কিছু ঝুঁক আছে, যা পরিবর্তন করা যায় না যেমন, পারিবারিক ইতিহাস, বয়স ও গোত্র। তবে আরও কিছু ঝুঁকি আছে যেগুলো বেশ বদলানো যায়।
 ধূমপান করা ঠিক নয়।  রক্তচাপ বেশি হলে বা রক্তে কোলেস্টেরল মান বেশি থাকলে চিকিৎসকের চিকিৎসা ও পরামর্শ মেনে চলা উচিত।  খাবারে যদদূর সম্ভব স্যাচুরেটেড ফ্যাট ও কোলেস্টেরল কম থাকা ভালো। ট্রান্সফ্যাট একেবারে বাদ দিলেই মঙ্গল।  স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখা উচিত।  প্রতিদিনের দিন যাপনে ব্যায়াম অবশ্যই থাকা উচিত।  ডায়াবেটিস যদি থাকে, তাহলে রক্তের সুগার যেন থাকে নিয়ন্ত্রণে।  মদ্যপান করে থাকলে বর্জন করা উচিত।

৫. সিওপিডি
শ্বাসযন্ত্রের ক্রনিক রোগ যেমন ব্রংকাইটস এবং এমফাইসেমা-এদের বলে সিওপিডি। পুরো মনে করলে দাঁড়ায় কুনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ। এ রোগ ঠেকাতে হলে—
 ধূমপান কখনই নয়। কেউ ধূমপান করলে পাশে, সে ধোঁয়াও গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকা উচিত।  রাসায়নিক বস্তু এবং বায়ু দূষণের মুখোমুখি যত কম হওয়া যায়, ততই মঙ্গল।
৬. টাইপ ২ ডায়াবেটিস
সবচেয়ে সচরাচর ডায়াবেটিস টাইপ ২ ডায়াবেটিস রক্তে বেড়ে যায় সুগার।
একে নিয়ন্ত্রণ না করলে হয় নানা রকমের জটিলতা, হূদরোগ, অন্ধত্ব, স্নায়ু রোগ, কিডনির রোগ।
একে প্রতিরোধ করতে হলে—
 শরীরে বেশি ওজন থাকলে বাড়তি ওজন ঝরাতে হবে।
 ফল, শাকসবজি ও কম চর্বি খাবারে সমৃদ্ধ স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে।  দৈনন্দিন জীবনযাপনে থাকবে অবশ্যই ব্যায়াম।

৭. ফ্লু
ইনফ্লুয়েঞ্জা হলো সচরাচর একটি ভাইরাস সংক্রমণ। সুস্থ শরীরের মানুষের জন্য ফ্লু এত গুরুতর নয় বটে, তবে ফ্লুর জটিলতা মারাত্মক হতে পারে, বিশেষ করে যাদের দেহ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল বা যাদের ক্রনিক রোগ রয়েছে।
ফ্লু থেকে রক্ষা পেতে হলে বছরে একবার ফ্লুর টিকা নিতে হবে।

৮. আত্মহত্যার মতো দুর্ঘটনা
পুরুষের স্বাস্থ্যঝুঁকির মধ্যে বড় একটি হলো আত্মহত্যা। অনেক দেশে, সমাজে পুরুষের মধ্যে আত্মহত্যার কারণ হলো বিষণ্ন্নতা। মন বিষণ্ন মনে হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া ভালো। চিকিৎসা তো রয়েছেই। নিজের সর্বনাশ করা কেন? যতই প্রতিকূল অবস্থাই হোক, যত বিপদই হোক, একে অতিক্রম করাই তো মানুষের কাজ।

৯. কিডনির রোগ
ডায়াবেটিস বা উচ্চরক্তচাপের প্রথম জটিলতা হলো কিডনি বিকল হওয়া। ডায়াবেটিস বা উচ্চরক্তচাপ থাকলে চিকিৎসকের চিকিৎসা ও পরামর্শ নিতে হবে।
 স্বাস্থ্যকর আহার। নুন কম খেতে হবে।
 প্রতিদিন ব্যায়াম
 ওজন বেশি থাকলে ওজন ঝরানো।
 ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী ওষুধ।

১০. আলঝাইমারস রোগ
এই রোগ প্রতিরোধ করার কোনো প্রমাণিত উপায় নেই। তবে এসব পদক্ষেপ নেওয়া যায়—
 হূদযন্ত্রের যত্ন নেওয়া ভালো। উচ্চরক্তচাপ থাকলে হূদরোগ, স্ট্রোক, ডায়াবেটিস উঁচুমান কোলেস্টেরল থাকলে আলঝাইমার রোগের ঝুঁকি বাড়ে।  মাথায় যাতে আঘাত না লাগে, দেখা উচিত। মাথায় আঘাত লাগার সঙ্গে ভবিষ্যতে আলঝাইমার রোগ হওয়ার একটি সম্পর্ক আছে, বলেন অনেকে।  স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখা উচিত।
 প্রতিদিন ব্যায়াম।  ধূমপান বর্জন।  মদ্যপান বর্জন।
 সামাজিক মেলামেশা চালিয়ে যান।
 মানসিক ফিটনেস বজায় রাখতে হবে। মগজ খেলানোর জন্য চর্চা, ব্যায়াম। নতুন জিনিস শেখার চেষ্টা করা।

শেষ কথা
স্বাস্থ্যের ঝুঁকিগুলো গুরুত্বের সঙ্গে নিতে হবে।
ঝুঁকিগুলোকে মনে হবে ভয়ের কিছু, তবে আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই, বরং স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের জন্য যা কিছু দরকার করা উচিত।
স্বাস্থ্যকর খাদ্য গ্রহণ, দৈহিকভাবে সক্রিয় থাকা, ধূমপান করে থাকলে ছেড়ে দেওয়া, নিয়মিত চেকআপ এবং দৈনন্দিন কাজকর্ম ও চলাফেরায় সতর্ক থাকা, সবই করা ভালো। প্রতিরোধমূলক এসব কাজকর্ম চালিয়ে গেলে দীর্ঘ, স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যাবে।

অণ্ডথলি ফুলে যাওয়া



অণ্ডথলি ফুলে যাওয়া হলো অণ্ডথলি অস্বাভাবিক বড় হওয়া। আর অণ্ডথলি হলো এমন একটা থলি যার মধ্যে অণ্ডকোষ থাকে। যেকোনো বয়সী পুরুষের অণ্ডথলি ফুলে যেতে পারে। এর সাথে ব্যথা থাকতে পারে, আবার না-ও থাকতে পারে। এটা অণ্ডথলির এক পাশে অথবা দু’পাশেই হতে পারে। অণ্ডকোষ এবং পুরুষাঙ্গ জড়িত থাকতে পারে, অথবা না-ও থাকতে পারে।

অণ্ডথলি ফুলে যাওয়ার কারণ-

০ আঘাত

০ হার্নিয়া

০ কনজেসটিভ হার্ট ফেইলিওর

০ হাইড্রোসিল

০ অণ্ডকোষের প্রদাহ

০ অণ্ডকোষে প্যাঁচ খাওয়া

০ ভ্যারিকোসিল বা অণ্ডথলির শিরার স্ফীতি

০ কিছু নির্দিষ্ট ওষুধ

০ যৌনাঙ্গ এলাকায় শল্য চিকিৎসা

অণ্ডকোষে প্যাঁচ খাওয়া একটি মারাত্মক জরুরি অবস্থা। এ ক্ষেত্রে অণ্ডথলির মধ্যে অণ্ডকোষ পেঁচিয়ে যায় এবং এর ফলে অণ্ডকোষে রক্ত সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। যদি দ্রুত প্যাঁচ খোলা না যায় তাহলে অণ্ডকোষ স্থায়ীভাবে নষ্ট হয়ে যেতে পারে।

ঘরোয়া চিকিৎসা

০ প্রথম ২৪ ঘণ্টা অণ্ডথলিতে বরফের সেক দিতে হবে। এরপর সিজবাথ নিলে ফোলা কমবে।

০ যদি ব্যথা তীব্রহয় তাহলে একটি তোয়ালে পাকিয়ে অণ্ডকোষের ঠিক নিচে দু’পায়ের মাঝে রাখতে হবে। এতে ব্যথা ও ফোলা দুটোই কমবে।

০ দৈনন্দিন কাজ করার পর ঢিলেঢালা অ্যাথলেটিক সাপোর্টার পরা যেতে পারে। ফোলা কমে যাওয়া না পর্যন্ত কাজকর্ম করা থেকে বিরত থাকতে হবে।

কখন চিকিৎসকের শরণাপন্ন হবেন

যদি আপনার অণ্ডথলি ফুলে যায়, যদি ফোলাটা ব্যথাযুক্ত হয়, কিংবা যদি অণ্ডকোষে চাকা অনুভব করেন তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হবেন।

চিকিৎসক যা করবেন

চিকিৎসক আপনাকে শারীরিক পরীক্ষা করবেন ও রোগের ইতিহাস নেবেন। তিনি আপনাকে নিচের প্রশ্নগুলো উত্তর জানতে চাইতে পারেন-

০ কখন ফোলা শুরু হয়?

০ এটা হঠাৎ করে হয়েছে?

০ অবস্থা আরো খারাপ হচ্ছে?

০ ফোলাটা কত বড়?

০ ফোলাটায় কি পানি জমেছে?

০ ফোলা কি অণ্ডথলির এক দিকে, নাকি সমগ্র অণ্ডথলিতে?

০ দু’পাশের ফোলা কি একই ধরনের? (কখনো কখনো অণ্ডথলির ফোলা প্রকৃতপক্ষে বড় অণ্ডকোষ, অণ্ডকোষে চাকা অথবা শুক্রবাহী নালির ফুলে যাওয়ার কারণে হয়।)

০ আপনার যৌনাঙ্গ এলাকায় কোনো অপারেশন হয়েছে?

০ আপনার যৌনাঙ্গ এলাকায় কি কোনো আঘাত পেয়েছেন?

০ আপনার যৌনাঙ্গ এলাকায় কি সম্প্রতি কোনো সংক্রমণ হয়েছে?

০ আপনি বিছানায় বিশ্রাম নিলে কি ফোলা চলে যায়?

০ আপনার অণ্ডথলিতে কি কোনো ব্যথা আছে?

যৌন সংক্রামক রোগ



যৌন সংক্রামক রোগ হলো অন্যের শরীরের স্পর্শে নিজের দেহে মারাত্নক ধরনের জীবাণুর আক্রমণ। বহু ক্ষেত্রে যৌন সংক্রামক রোগের সঠিক কোনো চিহ্ন এবং উপসর্গ থাকে না। একজন পুরুষ অথবা একজন নারী কাজেই বুঝতে পারে না তারা আদৌ যৌন সংক্রামক কোনো রোগে আক্রান্ত কিনা। একটি দেশে বা সমাজে যৌন রোগে আক্রান্ত রোগিদের প্রকৃত সংখ্যা কত তা কখনো সঠিকভাবে নির্ণয় করা যায় না । আমাদের দেশে অধিকাংশ নারী যৌন নানা সমস্যায় ভুগে থাকে তবে যৌন রোগে নয় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে যে সব নারী পতিতাবৃত্তির সাথে জড়িত তাদের যৌন সংক্রামক রোগের সম্ভবনা থাকে শতকরা ৯৯ ভাগ। ধারণা করা হয় প্রতি বছর গড়ে ৫০ মিলিয়ন রোগী নতুন করে সিফিলিসে এবং ২৫০ মিলিয়ন রোগী গনোরিয়ায় আক্রন্ত হয়। বৃটেনে প্রতি বছর ০.৫ মিলিয়ন নতুন যৌন রোগী শনাক্ত করা হয়। সেখানে আগের তুলনায় গনোরিয়া এবং সিফিলিসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা শতকরা ৬ ভাগ বেড়ে গেছে উন্নত দেশগুলোতে স্যালামাইডিয়া নামের এক প্রকার জীবাণু ঘটিত যৌন রোগীর সংখ্যা আশস্কাজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। ইংল্যান্ডে নতুন সনাক্ত যৌন রোগীদের শতকরা ৪০ জন এই স্যালামাইডিয়া আক্রান্ত । পেনিসিলিনসহ অন্যান্য এন্টিবায়োটিক আবিস্কৃত হবার পর এই রোগের জটিলতা কমে গেছে । কিন্তু অযৌক্তিকভাবে এন্টিবায়োটিক ব্যবহারের জন্য রেজিস্ট্যান্ট জীবাণুর সংখ্যাও বেড়ে গেছে। শুধু তাই নয় পেনিসিলিনের চেয়েও অধিক শক্তিশালী এন্টিবায়োটিক অনেক সময় এই রোগগুলোর জন্য কাজ করে না। জীবাণুগুলো । এন্টিবায়োটিকের বিরুদ্ধে কার্যকর প্রতিরোধ গড়ে তুলে।তবে এটা ঠিক যে তাড়াতাড়ি চিকিৎসার কারণে বর্তমানে মারাত্নক যৌনরোগ যেমন নিউরোসিফিলিস, সিফিলিস ঘটিত হৃদরোগ ইত্যাদির সংখ্যা একেবারেই কমে গেছে। এই মুহূর্তে একমাত্র এইডস ছাড়া সব যৌনরোগই অতি সহজে সারিয়ে তোলা সম্ভব। যদি তা সময়মতো নিরীণ করা যায়। যে উপসর্গগুলো দেখা মাত্র ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া উচিত বা যে বিষয়গুলো ল্য করা উচিত কিংবা যে বিষয়গুলো সম্বন্ধে ডাক্তারের কাছে জেনে নেয়া উচিত সে গুলো হলো –

১. পুরুষের লিঙ্গের মাথায় যদি কোনো সাদা দাগ বা র‌্যাস দেখা যায় তবে ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া উচিত
২. অনেককে অভিযোগ করতে শোনা যায় যে, স্ত্রীর মাসিক চক্র চালাকালীন সময়ে তার সাথে যৌনমিলন ঘটানোর ফলে লিঙ্গে অস্বাভাবিক দানার সৃষ্টি হয় । এটি আসলে যৌন সংক্রামক কোনো রোগের উপসর্গ কিনা সে ব্যাপারে অনেকে বিভ্রান্ত থাকেন । এই বিভ্রান্তি কাটানোর জন্য ডাক্তারী পরামর্শ নেয়া উচিত ।
৩. মনে রাখা উচিত পতিতা সঙ্গমের ফলে অবশ্যই একজন পুরুষের যৌন সংক্রামক রোগ হতে পারে । অনেক পুরুষ পতিতা সহবাসের পরে ডেটল বা এই জাতীয় পদার্থ দিয়ে লিঙ্গ ধুয়ে ফেলে মনে করেন হয়তো বা তার জীবাণু সংক্রামণ হবে না। কিন্তু এটি একটি ভুল ধারণা।
৪. অনেকে আবার প্রচুর পরিমাণে মদ পান করে পতিতা সঙ্গম করে যাতে করে তারা সহজেই যৌন সংক্রামক রোগে আক্রান্ত হয়। ডাক্তারের কাছে রোগের চিকিৎসা নেওয়ার সময় যদি এ ব্যাপারটি উল্লেখ না করা হয়। তবে ডাক্তারের পক্ষে রোগ নির্ণয় করা সমস্যা হবে।
৫. অনেকে যৌনমিলনের পরে সোডা জাতীয় পানি পান করে থাকে। অনেকের ধারণা এতে করে যৌন সংক্রমক রোগের প্রকোপ কমে। আসলে এটি একটি ভুল ধারণা।
৬. ভেষজ নানা চিকিৎসা দ্বারা অনেক ক্ষেত্রে যৌন সংক্রমক রোগের হাত থেকে রা পাওয়া যায়। তবে এসব ভেষজ চিকিৎসা মান সম্মত হতে হয়।
৭. যৌনমিলনের সময় কনডম ব্যবহার করলে যৌন সংক্রামক রোগের সম্ভাবনা থাকে না
৮. অনেকে নারীর দীর্ঘদিন যাবৎ যোনি থেকে তরলের রণ হবার পরও এ ব্যাপারে কোনো ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহন করে না বিধায় এটি আসলে যৌন সংক্রামক রোগের উপসর্গ কিনা তা বলা মুশকিল হয়ে দাঁড়ায়।

যৌন ইনফেকশন


সাধারণত যৌন ইনফেকশনের জন্য যৌন সংসর্গ দায়ী। মুখে ও যৌনাঙ্গে শরীরের স্পর্শকাতর কোথাও যৌন সংক্রামক ব্যাধি থেকে থাকলে তা অপরকে আক্রান্ত করে থাকে সাধারণত পাঁচটি যৌন অসুখ পৃথিবীতে দেখতে পাওয়া যায়। এর মধ্যে সিফিলিস এবং গনোরিয়া প্রধান। এ ছাড়াও স্যাক্রয়েড, লিম্ফগ্রানোলোমা বেনেরাস এবং গ্রানোলোমা ইনজিনুয়াল অপর কিছু যৌনরোগ। নারীদের যৌন সংক্রামক রোগ হয় সাধারণত বহুগামিতার ফলে। অপরদিকে সমকামিতা এবং পতিতা সহবাসের জন্য পুরুষের যৌন সংক্রামক রোগ হতে পরে। নারী পুরুষ উভয়ের জন্য যৌন সংক্রামক রোগ যৌন জীবনের জন্য খুব ঝুঁকিপূর্ণ । নারী স্বাস্থ্যের ব্যাপারে আলোচনায় যৌন সংক্রামক নানা বিষয়ে আলোচনা করা উচিত।

যৌন সমস্যার চিহ্ন এবং উপসর্গ
যোনিতে বা ভালভাতে র‌্যাস
পায়ুর কাছাকাছি র‌্যাস
কুচকিতে র‌্যাস
নারীর স্তনে জ্বালাপোড়া
ঝিমুনি ভাব
যোনির মাথায় ঘামাচির মতো দানা
যৌনমিলনে ব্যথা
যোনির অস্বাভাবিক সমস্যা

শরীরের অন্যান্য চিহ্ন এবং উপসর্গ-
দ্রুত চুল হারানো
চোখের ইনফেকশন
পুঞ্জ পুঞ্জ মাথা ব্যথা
ঠোঁটের র‌্যাস
শরীরের অন্যান্য স্থানে র‌্যাস
চামড়ায় ফুসকুড়ি
হাতে এবং হাতের আঙ্গুলের র‌্যাস

হাইজিন নির্দেশনা-
১. প্রতি দিন নিয়মিত যৌনাঙ্গ ধোয়
২. সুতির অন্তর্বাস পরা
৩. রাসায়নিক পদার্থ দিয়ে যৌনাঙ্গ ধোয়া
৪. পায়ু সামনের দিক থেকে পেছনের দিকে ধোয়া
৫. প্রতিদিন অন্তর্বাস পরিবর্তন করা
৬. যৌনসঙ্গীর ইনফেকশন আছে কিনা সে ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া
৭. যৌনমিলনের আগে অবশ্যই পুরুষকে কনডম ব্যবহার করতে বলা
৮. যৌনমিলনের আগে এবং পরে নারীর যৌনাঙ্গ ধুয়ে পেলা
৯. যৌনমিলনের পরে মূত্র ত্যাগ করা
১০ নিয়মিত ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করা
১১. যৌন আচরণ যেন অবাধ না হয় সেদিকে খেয়াল রাখা
১২. যৌনসঙ্গী বা সঙ্গিনীর ডাক্তারী পরীক্ষা করানো
 
 
+8801915885010

মেয়ের শরীরে মায়ের জরায়ু


দুজনেরই বয়স ৩০। একজনের জন্ম জরায়ু ছাড়াই। আরেকজন জরায়ু ক্যানসারে আক্রান্ত ছিলেন। চিকিৎসা চলাকালে তাঁর জরায়ু কেটে ফেলতে হয়।
সুইডেনের বাসিন্দা এই দুই নারী ভিন্ন পরিবারের হলেও তাঁদের ভাবনা ছিল অভিন্ন। তা হলো নিজের ভ্রূণে মাতৃত্ব অর্জন। এবার সেই ভাবনার অবসান ঘটালেন তাঁদেরই মা। মেয়ের শরীরে প্রতিস্থাপন করা হলো মায়ের জরায়ু। চিকিৎসকদের দাবি, বিশ্বে মায়ের জরায়ু মেয়ের শরীরে প্রতিস্থাপনের এমন ঘটনা এই প্রথম। তবে মা ও মেয়েদের নাম-পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি।
গতকাল মঙ্গলবার জরায়ু প্রতিস্থাপনের এ খবর দিয়েছে সুইডেনের গোথেনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়। আর জরায়ু প্রতিস্থাপনে অস্ত্রোপচারের কাজটি সম্পন্ন হয়েছে গত সপ্তাহে। অংশ নেন ১০ জনের বেশি শল্যচিকিৎসক। নেতৃত্বে ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্ত্রীরোগবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ম্যাটস ব্রায়েনস্ট্রোয়েম। তিনি জানান, কোনো জটিলতা ছাড়াই এই কাজটি তাঁরা করতে পেরেছেন। শরীরে জরায়ু প্রতিস্থাপনের পর মেয়ে দুজন সুস্থ আছেন। কিন্তু অস্ত্রোপচারের কারণে তাঁরা শারীরিকভাবে কিছুটা দুর্বল।
তবে জরায়ু প্রতিস্থাপনের ঘটনাটি পুরোপুরি সফল বলতে নারাজ চিকিৎসক দলের সদস্য মাইকেল ওলোসন। তিনি বলেন, তাঁরা সন্তান ধারণ না করা পর্যন্ত এই জরায়ু প্রতিস্থাপনকে সফল বলা যাবে না।
চিকিৎসকেরা বলছেন, এক বছর পর্যবেক্ষণের পরই কেবল বলা যাবে তাঁরা হিমায়িত ভ্রূণ গর্ভধারণে সক্ষম কি না।
আর যাঁরা তাঁদের সন্তানের মাতৃত্ব ফিরিয়ে দিলেন, তাঁরা কেমন আছেন? অধ্যাপক ব্রায়েনস্ট্রোয়েম বললেন, মায়েরাও সুস্থ। হাঁটাচলা করতে পারছেন। কয়েক দিনের মধ্যেই তাঁরা বাড়িতে ফিরে যেতে পারবেন।
ব্রায়েনস্ট্রোয়েম বলেন, জরায়ু প্রতিস্থাপনে আগ্রহী ১০ জন নারীর ওপর পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, তাঁদের ভেতর পাঁচ থেকে ছয়জনই এই পদ্ধতির চিকিৎসা নিতে সক্ষম হবেন।
জরায়ু প্রতিস্থাপনের ঘটনা নতুন নয়। গত বছর ৯ আগস্ট তুরস্কের আকদেনিজ ইউনিভার্সিটি হাসপাতালের চিকিৎসক ড. ওমর ওজকানের তত্ত্বাবধানে সফলভাবে প্রথম জরায়ু প্রতিস্থাপন হয়। জরায়ু ছাড়া জন্ম নেওয়া ২১ বছর বয়সী তুর্কি নারীর শরীরে সেটি প্রতিস্থাপন করা হয়েছিল। তখন এক মৃত ব্যক্তির শরীর থেকে জরায়ুটি নেওয়া হয়। সন্তানের জন্ম না হওয়া পর্যন্ত ওই প্রতিস্থাপন সফল কি না বলা যাবে না।
এর আগে ২০০০ সালে সৌদি আরবে জরায়ু প্রতিস্থাপনের কাজ সম্পন্ন হয়েছিল। কিন্তু শারীরিক অসুস্থতার কারণে তিন মাস পর সেটি সরিয়ে ফেলতে হয়। এএফপি ও বিবিসি।

নারীর জন্য স্প্রে



যে সকল মহিলা দীর্ঘদিন ধরে যৌন শীতলতায় ভুগছেন তাদের জন্য এক আনন্দের বার্তা ঘোষণা করেছেন গবেষকরা। গবেষকদের মতে, এক বিশেষ ধরনের তরল পদার্থ মহিলাদের যৌনাঙ্গে স্প্রে করলে তাদের যৌনাকাঙক্ষা বাড়তে পারে এবং সেই সাথে শরীরও হতে পারে চাঙ্গা। Alprostadil নামের এ ওষুধটি কিন্তু একেবারে নতুন নয়। ইতোপূর্বে এই ওষুধটি পুরুষদের যৌন সমস্যা সমাধানে ব্যবহ্নত হতো। Prostaglandin E থেকে এটি প্র‘ত করা হয়।

মূলত সেই মহিলারাই যৌন শীতলতায় ভোগেন যাদের শরীর ও মন একই সাথে যৌন ইচ্ছায় সাড়া দেয় না। সম্প্রতি আমেরিকান ইউরোলজিক্যাল এ্যাসোসিয়েশনের বার্ষিক সভায় এ সম্বন্ধীয় এক সমীক্ষায় রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়। রজঃনিবৃত্তপ্রাপ্ত যৌন শীতলতায় ভোগা ৪০ থেকে ৭০ বছর বয়স্ক মহিলাদের ওপর পরিচালিত এই সমীক্ষায় দেখা যায় যেসব মহিলা অষঢ়ৎড়ংঃধফরষ নামক তরল ওষুধটি তাদের ভগাঙ্কুর ও যোনিপথে স্প্রে করেছেন তাদের তীব্র থেকে অতি তীব্র যৌনাকাঙক্ষা সৃষ্টি হয়েছে এবং শরীর ও মন সেজন্য প্র‘ত হয়েছে। সমীক্ষায় এই ফলাফলের কারণে গবেষকরা আশাম্বিত এবং সেই সাথে যারা যৌন শীতলতা সংক্রান্ত সমস্যায় ভুগছেন তারাও আশাম্বিত হতে পারেন এই ভেবে যে, অষঢ়ৎড়ংঃধফরষ স্প্রে ব্যবহারে জীবন আবারও হতে পারে মধুময়।

জিঙ্ক খাও নিউমোনিয়া হটাও

প্রতিদিন খাবারের সাথে জিঙ্ক সম্পূরক খাদ্য গ্রহণের মাধ্যমে উন্নয়নশীল দেশগুলোর দরিদ্র শিশুদের নিউমোনিয়ার হার শতকরা প্রায় ২৫ ভাগ কমিয়ে আনা যেতে পারে। সম্ভাবনাময় এবং চমকপ্রদ এ তথ্য প্রকাশ করেছে ব্রিটিশ মেডিক্যাল জার্নাল।

সাধারণত উন্নয়নশীল দেশগুলোর দরিদ্র শিশুরাই নিউমোনিয়াসহ শ্বাসনালীর বিভিন্ন প্রদাহে আক্রান্ত হয়ে থাকে। ‘জিঙ্ক’ এর অভাবে শিশুর ডায়ারিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনাও অনেক বেড়ে যায় এবং এর ফলে তাদের রোগ প্রতিরোধ করার ক্ষমতাও কমে যায়। এ ধরনের শিশুরাই পরবর্তীতে নিউমোনিয়া ও শ্বাসনালীর প্রদাহজনিত রোগে আক্রান্ত হয়।

সম্প্রতি ভারতের নয়াদিল্লীতে ১-১০ মাস বয়সী প্রায় আড়াই হাজার শিশুর ওপর ৪ মাসব্যাপী এক গবেষণা সমীক্ষা চালানো হয়। সমীক্ষায় দেখা যায়, যে সকল শিশু জিঙ্ক সম্পূরক খাদ্যগ্রহণ করেছে তাদের নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার হার জিঙ্ক গ্রহণ করছে না এমন শিশুদের চেয়ে অনেক কম। আর তাই গবেষকদের ধারণা, জিঙ্ক সম্পূরক খাদ্য নিউমোনিয়া প্রতিরোধের ক্ষেত্রে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। অতএব আপনার শিশুকে জিঙ্ক সম্পূরক খাদ্য খাওয়ান এবং নিউমোনিয়া থেকে রক্ষা করুন।

*************************

মহিলাদের প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া


প্রস্রাবে প্রদাহ যেকোনো বয়সেই হতে পারে। তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে বয়ঃসন্ধির পর থেকে বৃদ্ধ বয়সের যেকোনো সময়। মূল উৎস হচ্ছে অপরিচ্ছন্নতা, দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকা, পায়ুনালী, ঘন ঘন কৃমি কর্তৃক সংক্রমণ, সহবাসের কারণে মূত্রনালীতে জীবাণু প্রবেশ করতে পারে। পায়ুনালী থেকেই, কোলাই নামক জীবাণু কর্তৃক শতকরা ৭০-৮০ ভাগ প্রস্রাবের প্রদাহ হয়ে থাকে। অন্যান্য জীবাণুর মধ্যে প্রোটিয়াস, ক্লেবসিনা ও সিওডোমনাসের নাম উল্লেখযোগ্য। সম্প্রতি স্টেফাইলোক্কাস স্কোরোফাইটিকাস নামক জীবাণু মেয়েদের ১৫ থেকে ৩০ ভাগ প্রস্রাবের কারণ।

জীবণু প্রস্রাবের পথে প্রবেশের পর মূত্রনালী দিয়ে ক্রমেই কিডনি পর্যন্ত যেতে পারে। প্রস্রাবের প্রদাহের প্রথম শর্ত হচ্ছে জীবাণু প্রস্রাবের রাস্তায় জমা হতে হবে। তবে যেকোনো কারণে প্রস্রাবের রাস্তায় জীবাণু জমতে পারে। জীবাণু সেখানে থেকে মূত্রথলিতে প্রবেশ করার পর প্রস্রাবের প্রদাহ হবে কি না তা নির্ভর করছে অনকে কারণের ওপর। এর মধ্যে মূত্রথলির প্রতিরোধ শক্তি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। মূত্রথলির ভেতরের দেয়ালে ইমিউনো গ্লোবিউলিন নামক একটি স্তর রয়েছে, যে জন্য জীবাণু মূত্রথলির কোষের সাথে সংযুক্ত হতে পারে না।

প্রস্রাব এমনিতেই অ্যাসিডিক, এ অ্যাসিডের স্বাভাবিক মাত্রা বজায় থাকলে জীবাণু বাড়তে পারে না। শুধু তা-ই নয়, পরিমিত পানি খেলে প্রতিবার প্রস্রাবের মাধ্যমে মূত্রথলির ভেতর থেকে জীবাণু বের হয়ে যায়।
মূত্রথলির প্রদাহের উপসর্গ হচ্ছে, বারবার প্রস্রাবের বেগ হওয়া, প্রস্রাব করার সময় জ্বালা অনুভূত হওয়া, মাঝে মধ্যে তলপেটে ব্যথা হওয়া, কখনো কখনো পরিমাণে কমে গিয়ে ফোঁটায় ফোঁটায় প্রস্রাব হওয়া। এ অবস্থা সৃষ্টি হলে প্রস্রাবের রঙ ধোয়াটে ও দুর্গদ্ধযুক্ত হতে পারে। তবে একটি ব্যাপার খুবই লক্ষণীয়, তা হলো প্রস্রাব করে আসার পরপরই আবার প্রস্রাবের বেগ অনুভব করা।

এই প্রদাহ ক্রমেই কিডনিকেও আক্রান্ত করতে পারে। এ অবস্থায় নাভীর দু’দিক থেকে পেছন পর্যন্ত ব্যথা ছড়াতে পারে। কেঁপে কেঁপে জ্বর আসতে পারে। প্রস্রাবের রঙ রক্ত বর্ণও হতে পারে। খওয়ায় অরুচি, মাথা ঘোরানো, বমি বমি ভাব, সমস্ত শরীর ব্যথা ইত্যাদি হতে পারে। বাসর রাতের পর অথবা তারও দু-এক সপ্তাহ পর নববিবাহিত মেয়েরা মূত্রথলির প্রদাহে আক্রান্ত হতে পারে, একে হানিমুন সিসটাইটস বলে। অবশ্য প্রস্রাবের প্রদাহ ছেলেদের চেয়ে মেয়েদের বেশি হয়। তবে শতকরা প্রায় ৬০ ভাগ মহিলা বিশেষ করে যৌন সক্রিয় বয়সে এ রোগে আক্রান্ত হয়। এর কারণ হচ্ছে মহিলাদের মলত্যাগের রাস্তা ও প্রস্রাবের রাস্তার মধ্যে দূরত্ব অনেক কম। কাজেই জীবাণু পায়ুনালীর রাস্তা থেকে প্রস্রাবের পথে সহজেই প্রবেশ করতে পারে।
রোগের বিস্তারিত ইতিহাস, লক্ষণ, উপসর্গ ও ল্যাবরেটরি পরীক্ষা-নিরীক্ষার সাহায্যে সঠিক রোগ নির্ণয় করা সম্ভব। প্রস্রাবের রুটিন পরীক্ষা, কালচার করে জীবাণু নির্ণয় করা হয়। এ কালচার করার দু’টি দিক আছে, একটি জীবাণু বিঘ্নিতকরণ ও অপরটি এই বিঘ্নিত জীবাণুটির বিরুদ্ধে সঠিক ওষুধ বাছাই করা। এমন অনকে মহিলা আছে, যাদের প্রায়ই প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া ও ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়ার উপসর্গ থাকে এবং তাদের প্রস্রাব পরীক্ষা করলে শুধু শ্বেতকণিকা পাওয়া যেতে পারে। কিন্তু প্রস্রাব কালচার করলে কোনো জীবাণু পাওয়া যায় না, আর যদি জীবাণু পাওয়াও যায় তার পরিমাণ খুবই কম থাকে। মহিলাদের এ অসুবিধাকে ইউরেথ্রাল সিনড্রোম বলা হয়। বর্তমানে এ ইউরেথ্রাল সিনড্রোম সম্বন্ধে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পর দেখা গেছে এর শতকরা ৩০ ভাগ ক্ষেত্রে সত্যিকারের কোনো প্রদাহ থাকে না।

নারীর স্বাস্থ্য



অপারেশন কথাটা শুনলেই মনে আতংক-ভয়-উদ্বেগ আর এ্যাংজাইটি শুরু হয়। হাসপাতাল, ক্লিনিকে ভর্তি থাকা, ডাক্তার ঠিকমতো ওটিতে পৌঁছাবেন কিনা, অজ্ঞান হবার পর জ্ঞান ফিরবে কিনা, অপারেশনের পর সুস্থতা কতোটা নিশ্চিত, কোন জটিলতা সৃষ্টি হবে কিনা এবং খরচের দুশ্চিন্তা তো আছেই। এজন্য ভালো সার্জনের তত্ত্বাবধানে থাকা, পোস্ট অপারেটিভ ম্যানেজমেন্ট এবং অপারেশন উপযোগী ভালো ওটি সম্বলিত ক্লিনিক বা হাসপাতালের সঠিক নির্বাচন করতে পারলে অপারেশনে ভয় পাবার কোন কারণ নেই।

অপারেশন জরুরি হলে দেরি করবেন না। ডাক্তারকে প্রশ্ন করার অধিকার আপনার আছে। তাই ভালো করে জেনে বুঝে নিন এবং সাবধানতা অবলম্বন করুন। তাহলে যে কোন অপারেশনেই আপনি সহজে সুস্থ হয়ে উঠবেন। গুরুত্বপূর্ণ কিছু অপারেশনের সংক্ষিপ্ত বিবরণ।

সিজারিয়ানঃ
১ম ও ২য় সন্তান প্রসবের ক্ষেত্রে ব্যথা উঠার ১৮ ঘন্টা অতিক্রম হলে সিজার করা দরকার হতে পারে। ৩য় ও ৪র্থ ও পরবর্তী সন্তান প্রসবের ক্ষেত্রে ৬ থেকে ৮ ঘন্টা পর সিজারের সিদ্ধান্ত নিতে হতে পারে। যে কোন কারণে মা ও শিশুর জীবন বিপন্ন হলে, প্রসবের রাস্তা ছোট থাকলে, গর্ভফুল বা পস্নাসেন্টা অস্বাভাবিক অবস্থায় থাকলে, প্রসব পথ আংশিক বা পূর্ণাঙ্গ বন্ধ থাকলে, জরায়ুতে সঠিক স্থানে বাচ্চা না থাকলে, মায়ের একলামসিয়া বা প্রি একলামিসিয়া, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ থাকলে সিজারিয়ানের সিদ্ধান্ত নিতে হতে পারে।

প্রসবের তারিখ ঘনিয়ে এলে ভরা পেটে খাবেন না। সহজ প্রাচ্য হালকা বলকারক খাবার এবং পানীয় অর্থাৎ লেবুর রস, দুধ, ডাবের পানি, স্যুপ ইত্যাদি খাবেন। ভরা পেটে প্রসূতিকে অস্ত্রপচারের জন্য অজ্ঞান করা বিপদজনক। কফি, চা ও শক্ত খাবার এ সময় নিষিদ্ধ।

প্রসব ব্যথা উঠার পর অস্থির না হয়ে নিজের দৈনন্দিন ব্যবহারিক জিনিসপত্র যেমন-দাতের ব্রাশ, পেস্ট, চুল বাঁধার সরঞ্জাম, চিরুনী, তেল, সাবান, তোয়ালে, ক্রিম, পাউডার, শাড়ি, ম্যাক্সি, বস্নাউজ, পেটিকোট, বক্ষবন্ধনী, আর নবজাতকের জন্য নরম জামাকাপড়, বেবিওয়েল, বেবি মশারি, ফিডিং বোতল, রাবার ক্লথ, নিচের উপরের নরম কাপড় ইত্যাদি ব্যাগে ভরে নিন। আর অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে ডেলিভারি কোথায় করাবেন, তা ঠিক করে রাখবেন। প্রাইভেট হাসপাতালে বা ক্লিনিক হলে প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা কোথায় ভালো এবং খরচ কম লাগে তা জেনে কথাবার্তা ঠিক করে আসবেন। প্রাইভেট হাসপাতাল বা ক্লিনিক হলে আপনার পছন্দের ডাক্তারকেও পাশে পেতে পারেন।

হিস্টেরেক্টমিঃ
হিস্টেরেক্টমি মানে জরায়ু বা ইউটেরাস বাদ দেয়া। ইউটেরাসে ফাইব্রয়েড, টিউমার, সিস্ট এমন নানা কারণেই ইউটেরাস বাদ দেয়ার প্রয়োজন হয়। হিস্টেরেক্টমির পর পিরিয়ড বন্ধ হয়ে যায় ঠিকই কিন্তু নারীত্ব কমে না। তবে সন্তান ধারণ সম্ভব নয়। ওভারি বাদ দেয়া না হলে হরমোনের জোয়ারভাটা একই রকম থাকবে। মিলনের আনন্দ পূর্বাপর সমান থাকে।

রোগের লক্ষণঃ
অনিয়মিত ঋতুস্রাব, অতিরিক্ত বিস্নডিং, পেট এবং কোমরে ব্যথা, রক্তে ক্লট হওয়া, শারীরিক মেলামেশায় রক্ত পড়া, তলপেট ভারী লাগা, মুত্র ত্যাগের সময় প্রসাবের রাস্তা দিয়ে কিছু নেমে আসা, এমন সব লক্ষণ থেকে বোঝা যায় ইউটেরাস বা ওভারিতে টিউমার জনিত কোন সমস্যা আছে। আলট্রাসনোগ্রাফিতে পরীক্ষা করার পর অপারেশনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। অনেক ভাবেই এই অপারেশন করা যায়। সবচে বেশি করা হয় অ্যাবডমিনাল হিস্টেরেক্টমি। যা তলপেট কেটে করা হয়। সাধারণভাবে তিন থেকে পাঁচ ইঞ্চি আড়াআড়িভাবে কেটে নেয়া হয়। লম্বালম্বি কাটা প্রয়োজন হয় কিছু ক্যানসারের ক্ষেত্রে অথবা খুব বড় কোন ফাইব্রয়েড বা ওভারিয়ান সিস্ট থাকলে। এছাড়া নীচপথে অপারেশন করা হয়। এ পদ্ধতিতে পেটের ওপর কাটার প্রয়োজন হয় না। প্রোলান্স থাকলে তাও একসাথে মেরামত করে দেয়া হয়। অপারেশনের পর চার সপ্তাহ ভারী কাজ না করা।

চার সপ্তাহ শারীরিক মিলন বন্ধ রাখা। ড্রাইভিং না করা। রক্ত বের হলে ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করা। সমুদ্রে গোসল না করা। ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধপথ্য খাবেন।

ওভারিতে সিস্টঃ
নানা কারণেই ওভারিতে সিস্ট হয়। ইদানীং অল্পবয়সী মেয়েদের মধ্যে এ প্রবণতা অত্যন্ত বেশি পরিমাণে দেখা যায়। এর প্রধান কারণ শারীরিক পরিশ্রমে অনিহা খেলাধুলা দৌড়ঝাঁপ না করা, খাদ্য এবং হরমোনের গন্ডগোলের ফলে ঋতুস্রাবে সমস্যা ও ওভারিতে সিস্ট হয়।

লক্ষণঃ
মোটা হয়ে যাওয়া। মুখে এবং শরীরে লোমের আধিক্য, মেজাজ খিটখিটে হওয়া।

চিকিৎসা

বেশিরভাগ রোগী ওষুধেই সেরে যায়। অনেক সময় থাইরয়েডের গন্ডগোলও থাকে। তারও চিকিৎসার প্রয়োজন। তবে ওষুধের পাশাপাশি জরুরি হলো ব্যায়াম করা, হাঁটাহাটি করা, খাদ্যাভাস নিয়ন্ত্রণ, ভাজাপুড়া না খাওয়া, ওজন কমানো। অন্যান্য ক্ষেত্রে অপারেশনের প্রয়োজন হয়।

ফাইব্রয়েডঃ
ফাইব্রয়েড হলো নারী দেহের অত্যন্ত কমন এক ধরনের টিউমার। এই টিউমার থেকে ক্যান্সার হবার সম্ভাবনা এক শতাংশের কম। অধিকাংশ ক্ষেত্রে অপারেশন না করেই এর চিকিৎসা করা সম্ভব। সন্তান নেবার আগে অপারেশন না করে শুধুমাত্র বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিলেই হবে। তবে সন্তান প্রসবের পর ফাইব্রয়েড সারিয়ে ফেলতে হবে। সিজারের সময় ফাইব্রয়েড অপসারণ করা হয়। ২৫ শতাংশ মহিলার দেহে ফাইব্রয়েড থাকতে পারে। ৩০ থেকে ৪০ বছরের মহিলাদের মধ্যে ফাইব্রয়েড আক্রান্তের হার বেশি।

কোথায় হয়ঃ
মূলত মহিলাদের জরায়ুতে ফাইব্রয়েড হয়ে থাকে। জরায়ুর পেশীতে ও ভেতরের ত্বকে, ফেলোপিন টিউবের মুখে, ব্রডলিগামেন্ট ও ডিম্বাশয়ের পাশে ফাইব্রয়েড সৃষ্টি হতে পারে। অনুমান করা হয়, যৌবনাবতীর দেহে ইস্ট্রোজেন হরমোন নিঃস্বরণের সাথে এই ফাইব্রয়েড সৃষ্টির কোন সম্পর্ক থাকতে পারে। কারণ নারী দেহে যখন ইস্ট্রোজেন সর্বাপেক্ষা বেশি ক্ষরণ হয়, সেই সময় অর্থাৎ ২৫ থেকে ৪০ বছর বয়েসে ফাইব্রয়েড তৈরি হয়। আবার মেনোপোজ হবার সাথে সাথে ফাইব্রয়েড বৃদ্ধি থেকে যায়।

লক্ষণঃ
মাসিকের সময় অতিরিক্ত রক্তস্রাব দশ পনেরো দিন পর পর হঠাৎ হঠাৎ রক্তস্রাব দেখা দেয়। তলপেট ভারী অনুভূত হয়। মাসিকের সময় পেটে অস্বাভাবিক ব্যথা হয়।

ক্ষতিঃ
শরীরে অস্বস্থি অনুভব, অকাল গর্ভপাত, রজস্রাব সমস্যা, কোষ্ঠ্যকাঠিন্য ও রক্তস্বল্পতা, স্থায়ী বন্ধত্ব বা সাময়িক বন্ধাত্বও হতে পারে এবং মূত্রথলিতে সংক্রমণ হতে পারে।

চিকিৎসাঃ
ব্যথা কমানো ওষুধ দিয়ে পরিস্থিতি সালাম দেয়া যায়। হরমোন থেরাপি দিয়েও ফাইব্রয়েড শুকিয়ে দেয়া সম্ভব। জটিল পরিস্থিতিতে চিকিৎসা অপারেশন।

**************************
ডাঃ নাদিরা বেগম
সহকারী অধ্যাপক জালালাবাদ রাগিব রাবেয়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, সিলেট।
চেম্বারঃ মেডিএইড, মধুশহীদ মাজারের পাশে, মেডিক্যাল রোড, সিলেট।
দৈনিক ইত্তেফাক, ০৯ মার্চ ২০০৮

প্রতিদিন ৩ টি কলা


লন্ডন, ১৯ জানুয়ারি: কলা আমাদের দেশের সবচেয়ে সহজলভ্য ফল। আর এই সহজলভ্য ফল নিয়েই এবার একটি নতুন গবেষণা প্রতিবেদন বের হলো। যেখানে সব বয়সের মানুষকেই বৃটিশ এবং ইতালিয়ান গবেষকরা দিনে অন্তত তিনটি করে কলা খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। খবর ডেইলি মেইল’র।



গবেষকরা জানান, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ এবং স্বাভাবিক রক্তপ্রবাহ নিশ্চিত করতে দেহে পটাসিয়ামের উপস্থিতি অত্যন্ত জরুরি। এছাড়াও দেহে পটাসিয়ামের আদর্শ উপস্থিতি নিশ্চিত করা গেলে কমে যায় স্ট্রোকের ঝুঁকিও। আর এই উপকারী পটাসিয়াম কলায় আছে প্রচুর পরিমাণে। গবেষকরা দেখেছেন, একটি কলায় প্রায় ৫০০ মিলিগ্রাম পটাসিয়াম থাকে। আর মানবদেহে প্রতিদিন ১৬০০ মিলিগ্রাওম পটাসিয়ামের যোগান দেয়া গেলেই স্ট্রোকের হাত থেকে বছরে বেঁচে যেতে পারে ১০ লাখ মানুষ।

গবেষকদের পরামর্শ অনুযায়ী, সকালের নাস্তায়, দুপুরে খাবারের পর এবং সন্ধ্যা চা কিংবা ভাজা-পোড়া খাবারের বদলে একটি করে কলা খেলে দেহে পটাসিয়ামের কোনো ঘাটতি থাকবে না। আর দেহে পটাসিয়ামের ঘাটতি না থাকলে স্ট্রোকের শিকার হয়ে কয়েক মিনিটের ব্যবধানে প্রাণ হারাতে হবে না কাউকে।

ইউনিভার্সিটি অফ ওয়ারউইক এবং ইউনিভার্সিটি অফ নেপলস’র গবেষকদের সম্মেলিত প্রচেষ্টায় এই কলার এই বিশেষ গুণটি প্রকাশ পেয়েছে। এই গবেষকরা বৃটেনের কয়েকটি হাসপাতালের ১৯৬০ থেকে শুরু করে বর্তমান সময় পর্যন্ত সব হেলথ রেকর্ড পর্যবেক্ষণ করেছেন। তারা স্ট্রোকের শিকার হয়ে মৃত্যুবরণ করা এবং হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীদের রিপোর্ট নিয়ে গবেষণা চালান।

তারা দেখ পান, যারা স্ট্রোকের শিকার হয়ে মারা গেছেন এবং যারা কোমায় ‍গেছেন তাদের সবার দেহেই পটাসিয়ামের প্রচুর ঘাটতি ছিল। তাই সেই পটাসিয়ামের ঘাটতি পূরণের জন্যই গবেষকেরা দিনে অন্ত তিনটি করে কলা খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।

কলা ছাড়াও আরো যেসব খাবারে পটাসিয়ামের উল্লেখযোগ্য উপস্থিতি রয়েছে সেগুলো হলো- বাদাম, দুধ, মাছ, সবুজ শাক এবং ডাল। তবে, এতো কিছুর শরণাপন্ন না হয়ে যদি দিনে অন্তত তিনটি কলা খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তোলা যায় তাহলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকবে, স্বাভাবিক থাকবে রক্তপ্রবাহও এবং স্টোকের ঝুঁকিও কমে যাবে অনেকাংশে।

বৃটিশ ও ইতালিয়ান গবেষকদের এই গবেষণা প্রতিবেদনটি আমেরিকান কলেজ অফ কার্ডিওলজিও’র একটি জার্নালে প্রকাশ পাবে।

বিশ্বে গর্ভপাত বাড়ছে



লন্ডন, ২০ জানুয়ারি: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) জানিয়েছে, বিশ্বজুড়ে গর্ভাপাতের সংখ্যা যে হারে বাড়ছে, তাতে নারীর স্বাস্থ্য বড় মাপের ঝুঁকিতে পড়ে গেছে এবং গর্ভাপাতের পরিমাণ বাড়ছেই।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গবেষকরা বলেছেন, বর্তমানে বিশ্বের প্রতি হাজারে ২৮ জন নারী গর্ভাপাত ঘটান। পাশাপাশি অনির্ভরযোগ্য ক্লিনিকের মাধ্যমের গর্ভাপাতের হারও বাড়ছে।

তারা বলেছেন, অনির্ভরযোগ্য ক্লিনিক ও চিকিৎসকদের মাধ্যমে গর্ভাপাত করানোর কারণে নারী দেহে রক্তপাতের পরিমাণ যেমন বাড়ছে, তেমনি ইনফেকশসেন পরিমাণও বাড়ছে। এতে প্রসবকালে নারীর মৃত্যুহারও যেমন বাড়ছে, তেমনি নারীস্বাস্থ্যও ঝুঁকিতে পড়ে গেছে।

হু’র গবেষকরা দাবি করেন, উন্নয়নশীল ও স্বল্পোন্নত দেশগুলোতে গর্ভাপাতকে নেতিবাচক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা হয়। এই কারণে এসব দেশে ঝুঁকিপূর্ণ গর্ভাপাত অতি স্বাভাবিক ব্যাপার। বিশেষ করে আফিকার অধিকাংশ দেশে শতকরা ৯৭ ভাগ গর্ভাপাত সম্পন্ন হয়, অবৈজ্ঞানিক ও অর্ভিরযোগ্য পন্থায়। লাতিন আমেরিকায় অর্ভিরযোগ্য গর্ভাপাতের সংখ্যাটি হচ্ছে ৯৫ শতাংশ। এশিয়ায় তা ৪০ শতাংশ, ওসেনিয়া অঞ্চলে ১৫ শতাংশ এবং ইউরোপে ৯ শতাংশ।

যত মেদ তত সমস্যা



সম্প্রতি আমেরিকান ক্যান্সার সোসাইটির গবেষণায় দেখা গেছে, অতিরিক্ত মেদ-এর সাথে ক্যান্সার-এর ঝুঁকি অনেক বেশি। অতিরিক্ত মেদ থেকে হতে পারে স্তন, জরায়ু, অন্ত্রনালী, খাদ্যনালী, অগ্ন্যাশয়, কিডনি, গলব্লাড়ার, লিভার, সার্ভিক্স, প্রষ্টেট ও লিম্ফ গ্ল্যান্ডের ক্যান্সার। মেদ বৃদ্ধির সাথে ক্যান্সারের এই ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের খোঁজও বের করে ফেলেছেন বিজ্ঞানীরা। মেদ বিশেষ করে পেটে অতিরিক্ত মেদ যা সাধারণত ‘ভূড়ি’ নামে পরিচিত যদি বেড়ে যায় তাহলে এর সাথে শরীরে বেশ কিছু হরমোন নিংস্বরণের মাত্রাও বেড়ে যায়। যেমন, সেক্স হরমোন, ইনসুলিন ও ইনসুলিনের মতো গ্রোথ ফ্যাক্টর-১ প্রভূতি। এই হরমোনগুলোই ক্যান্সার উদ্দীপক হিসেবে কাজ করে।

এই অনাকাঙ্খিত ক্যান্সার থেকে, মেদ ভূড়ি থেকে বাঁচাতে হবে, এর জন্য চিন্তা না করে আজই বিশেষ ব্যবস্থা নিতে হবে। ডায়েটিং, ব্যায়াম, ওষুধ অপারেশন সহ আরও বিভিন্নভাবে মেদ কমানো যেতে পারে। তবে যে পদ্ধতিই গ্রহণ করা হোক না কেন তার আগে অবশ্যই অভিজ্ঞ কারও পরামর্শ নিতে হবে। কারণ আপনার মেদ ভূড়ির কারণ কি তা আগে খুজে বের করতে হবে। তারপর সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে। অনেকের কোন ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ফলে ভূড়ি বাড়তে পারে আবার কারও বংশগত কারণে হতে পারে। কিংবা এমনও হতে পারে শুধুমাত্র অলস জীবন-যাপন করার জন্যও ভূড়ি বাড়তে পারে। যে কারণেই হোক আগে সঠিক কারণ নির্ণয় করতে হবে তারপর সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে।

মেদ-ভূড়ি কমানোর জন্য আদর্শ ব্যবস্থা হতে পারে খাদ্য নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা বা ডায়েটিং। ডায়াটিং হল একটি বিজ্ঞানসম্মত খাদ্য নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি যার মূল কথা হলো প্রতিদিন এমন পরিমাণে খাদ্য গ্রহণ যাতে শরীর সব ধরণের পুষ্টি উপাদান পর্যাপ্ত পরিমাণে পাবে কিন্তু মেদ বা ওজন বৃদ্ধি হবে না। প্রতিদিন একজনের কতটা ক্যালরী বা খাদ্যগ্রহণ প্রয়োজন তা নির্ভর করে ব্যক্তির ওজন, উচ্চতা, শারীরিক গঠন, শারীরিক পরিশ্রম ইত্যাদির ওপর। প্রয়োজনের চেয়ে বেশি ক্যালরী গ্রহণ করলে এবং বাড়তি ক্যালরী খরচ করে না ফেললে সারা শরীরেই মেদ জমে ওজন বৃদ্ধি ঘটে থাকে। কিন্তু তারপরও তলপেটে মেদ জমার প্রবণতা শরীরে অন্যান্য অংশের থেকে একটু বেশি। তাই খাদ্য নিয়ন্ত্রণের সাথে শারীরিক পরিশ্রম বা ব্যায়ামের কথাও চলে আসে মেদ ভূড়ি নিয়ন্ত্রণের জন্য। যে পদ্ধতিতেই মেদ ভূড়ি কমাতে যান না কেন তার আগে আপনাকে অবশ্যই খাদ্য নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা সম্পর্কে বিশেষজ্ঞ কারও পরামর্শ নিতে হবে। কারণ কোনভাবে না হয় আপনি একবার মেদ কমিয়ে ফেললেন। কিন্তু খাদ্য গ্রহণ নিয়ন্ত্রণ না করলে আবার মেদ বাড়তেই পারে। তাই এখনই খাদ্য নিয়ন্ত্রণ সম্পর্কে সচেতন হোন। জেনে নিন প্রতিদিন আপনার কতটুকু ক্যালরী দরকার, কোন খাবারগুলো খাদ্য তালিকায় স্থান দিবেন আর কোন খাবারগুলো আপনার প্রতিদিনের খাদ্য তালিকা থেকে বাদ দিবেন।
প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় রাখুন অল্প ভাত, আটার রুটি, ছোট মাছ, মুরগীর মাংস, মৌসুমী ফল ও প্রচুর শাক সবজি, টক দই, চিনি ছাড়া চা ও কফি।
খাদ্য তালিকা থেকে বাদ দিন উচ্চ ক্যালরীযুক্ত খাদ্য যেমন- রেড মিট, মিষ্টি ও মিষ্টি জাতীয় খাবার, চিনি, গুড়, কেক, চকলেট, আইসক্রিম, চিপস, চর্বিযুক্ত বড় মাছ, ঘি, মাখন, তেল, জ্যাম, জেলী, খেজুর, কিসমিস, কোল্ড ড্রিংক্স, আলু ইত্যাদি।

আপনার শরীরের বাড়তি মেদ ঝঁরিয়ে ফেলতে এবং নতুন করে শরীরে মেদ জমতে দিতে না চাইলে খাদ্য নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার পাশাপাশি প্রতিদিন অন্তত: ৩০ মিনিট ব্যায়ামের ব্যবস্থা রাখুন এবং মেদ ভূড়ি সংক্রান্ত সকল রোগকে বিদায় জানান।

ত্বকের সমস্যা এবং পরিচর্যা


দেহপট সনে নট সকলি হারায়’ একটি কথা আছে। দেহের আবরণ ত্বক। ত্বকে কুঞ্চন রেখা পড়ন্ত বেলার লক্ষণ। কিন্তু একে আরো কিছুদিন মসৃণ ত্বক রাখার কৌশলও তো আছে। ত্বক সুরক্ষা দেয় শরীরকে, কিন্তু কেবল কি তাই? সুস্থ ত্বক সৌন্দর্যেরও চিহ্ন। প্রতিদিনের পছন্দ, আমরা যা খাই, আমাদের আসা যাওয়া, চলাচল, অনুভব সবই প্রভাব ফেলে ত্বকের উপর।

চাই সন্দুর ত্বক

খাদ্যের দিকে নজর দিন। প্রচুর ভিটামিন সি, খুব কম চর্বি ও শর্করা খাবার বুড়িয়ে গেলেও সুন্দর রাখে ত্বক। এন্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার যেমন- মাছ, ফল, সবজি ত্বককে রক্ষা করে। চাই জটিল শর্করা (লালচাল, লাল আটা) এবং স্বাস্থ্যকর আমিষ।

খাদ্যে থাকা চাই ভিটামিন

এন্টিএজিং ক্রিমে থাকতে পারে ভিটামিন সি ও ই। কেবল তা কেন, এসব ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার খাওয়াও উচিত। সঙ্গে খণিজ সেলেনিয়াম। ফলে রোদ থেকে ত্বক রক্ষা পাবে। এমনকি ত্বকে ভাঁজ রেখা, বার্ধক্য রেখা দেখা দেবে দেরিতে। কমলালেবু, পেয়ারা, আমলকি, বাতাবিলেবু, লেবু এসব খাওয়া চাই বেশি বেশি।

দৌঁড়ানো বুড়ো হওয়া ত্বক থেকে বাঁচায়

ব্যায়ামের হিতকরী ফল পড়ে সারা শরীরে। অবশ্য দেহের বৃহত্তম অঙ্গ ত্বকেও। ব্যায়াম করলে রক্তচলাচল বাড়ে, ত্বক থেকে দূর হয়ে যায় বিষ বর্জ্য। রক্তচলাচল উন্নত হলে ত্বকের টিসুতে আসে বেশি বেশি আক্সিজেন ও পুষ্টিকনা যা ত্বককে কোলাজেন তৈরিতে সহায়তা করে। তাই কুষণ রেখা সহজে পড়েনা। ঘাম নিয়ে ভয় পাওয়ার হেতু নেই, ব্যায়ামে বরং রোমকুপ খুলে যায়। ব্যায়ামের পরপর মুখ ধোয়া উচিত। কপালে আটসাট বন্ধনী পরা উচিত নয়, এতে ঘাম আটকা পড়ে, ত্বকে হয় উত্তেজনা।

চাই ত্বক সৌন্দর্য বিশ্বাম

রাত জেগে দেখুন কয়েক রাত, ত্বকে পড়বে এর চিহ্ন। চোখের নিচে কালি, ফ্যাকাশে ত্বক, ফোলা চোখ। রাতে ৭-৮ ঘন্টা ঘুম শরীর ও ত্বককে রাখে তুঙ্গে। চিত্ হয়ে ঘুমানো ভালো। একদিন মুখ বালিশে চেপে শুলে ত্বকে ভাঁজ পড়বে।

গর্ভসঞ্চার বদলে দেয় ত্বক

৯০% গর্ভবতী নারীর তলপেটে রেখা দাগ পড়বেই। প্রসবের পর মিলিয়ে যাবার কথা। ময়শ্চারাইজার ব্যবহারে সুফল পাওয়া যায়। ভিটামিন এ পিল এবং লেজারেও সুফল পাওয়া যায়। ত্বকের আর একটি সমস্যা হলো ব্রণ, শরীরে বাড়তি হরমোনের জন্য হতে পারে। দিনে দু’বার মুখ ধোয়া, তৈলমুক্ত ময়শ্চারাইজার ব্যবহার করা যেতে পারে। ডাক্তারের পরামর্শও প্রয়োজন।

মেলাস্মা এড়াতে

গর্ভের সময় বা গর্ভ নিরোধক পিল ব্যবহারের সময় কোন কোন নারীর মুখে পড়ে গাঢ় রেখা। ত্বক রঞ্জক মেলানিন অতিরিক্ত হলে এমন গাঢ় ছাপ ছাপ দাগ পড়ে মুখে। প্রসবের পর বা পিল ছাড়ার পর মেলাস্মা মিলিয়ে যায়। খররোদ এড়ালে এবং সানক্রিন লোশন ব্যবহার করলে একে এড়ানো যায়। ডাক্তারের পরামর্শে ওষুধও ব্যবহার করা যায়। তবে খর রোদ এড়ানো বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

ত্বকে যেন না পড়ে ক্ষতিকর রশ্মি

রোদের বিশেষ করে খররোদে অনেক সময় থাকলে ত্বকে এর প্রভাব পড়ে, বিরূপ প্রভাব। ব্যবহার করুন ব্রড স্পেকট্রাম সানব্লক। জিংক অক্সাইড, টাইটানিয়াম অক্সাইড বা এভোরেনজোন প্রডাক্ট ব্যবহার করা যায় ডাক্তারের পরামর্শে। মাথায় ছাতা পরা, লম্বা হাত জামা পড়া। সকাল ১০ টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত রোদ এড়ানো ভালো। কারণ সে সময় রোদ থাকে বেশি।

বুড়িয়ে যাওয়া ত্বকের খেয়াল

বুড়ো হতে থাকলে ত্বকেও আসে পরিবর্তন। ত্বকে বেশি কোলাজেন তৈরি হয় না এবং যে ইলাস্টিন ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা বজায় রাখে তাও দুর্বল হয়ে যায়। ত্বককোষ দ্রুত তৈরি বা হানি কোনটিই হয়না সহজে। বুড়িয়ে যাওয়া ত্বক উজ্জীবিত করতে ঘষে ঘষে মরাত্বক তুলে ফেলুন। শুকিয়ে যায় না এমন সাবান, ময়শ্চারাইজার ব্যবহার করুন। রেটিনয়েড বা ভিটামিন সি ক্রিমও ব্যবহার করতে পারেন। রোদ থেকে দূরে থাকুন।

ক্যাফিন পান করবেন, নাকি ত্বকে প্রলেপ দেবেন

চা ও কফিতে যে ক্যাফিন তা পানিশূন্য করে ত্বককে। ফলে ত্বক যায় শুকিয়ে। কিন্তু দেখা গেছে ত্বকে চা পাতা বা কফি প্রয়োগ করলে ক্যাফিন রোদ থেকে ত্বকের ক্ষতি রোধ করে। কিছু ত্বক ক্যান্সারের ঝুঁকিও কমায়। ইঁদুরের মধ্যে পরীক্ষায় তা দেখা গেছে।

ধূমপান ত্বকের জন্য ভালো নয়

ধূমপান মোটেও ঠিক নয়, ত্বকের জন্য খুব খারাপ। অকালে ত্বকে ভাজ পড়ে, ত্বক যায় শুকিয়ে। ধূমপানে ত্বকে কমে রক্তচলাচল। ভাঙ্গে কোলাজেন। কম কোলাজেন তাই ত্বকে কুঞ্চণ। ঠোটের এই নড়াচড়া, ওঠানামা এসব ত্বকে ভাজ পড়তে সাহায্য করে। সিগারেটের শলাও ঠোটে লাগানো এর চর্চাতো হয়ই। তাই ধূমপান বর্জন ত্বকের জন্য জরুরীও বটে।

ত্বক পরিচ্ছন্ন রাখুন

প্রতিদিনই ত্বক দূষণের সংস্পর্শে আসে। সিগারেটের ধোঁয়া, মোটর গাড়ির ধূম, ধোয়াশা ত্বক পরিছন্ন রাখা চাই এসব থেকে। ত্বকের চাহিদা অনুযায়ী একে প্রতিদিন মৃদু সাবান বা ওয়াশ দিয়ে ধোবেন মুখ, মৃতত্বক কোষ সরাতে মুখ ঘষুণ। এরপর প্রয়োগ করুন রেটিনয়েড ক্রিম বা ময়শ্চারাইজার। তৈলাক্ত ত্বকের জন্য তৈলমুক্ত ময়শ্চারাইজার ব্যবহার করুন।

শীতে ঘরে বাইরে

হিম শীতল আবহাওয়া ও শীতল বাতাস শুষ্ক ত্বক আনে। একজিমা ও রজাসিয়া থাকলে অবস্থা অবস্থা শোচনীয় করে। কেবল বাইরের শীতল তোই নয়, ঘরের শুষ্কতাপ ত্বকের উপর বিরুপ প্রভাবও ফেলে। ঘরে হিউমিডিফায়ার থাকলে ভালো। প্রচুর জলপান, ময়শ্চারাইজার ব্যবহার। সানস্ক্রিন।

ভ্রমণে ত্বকের খেয়াল

উড়োজাহাজের ভেতরে শুষ্ক ও কট্কটে্ হয়ে যায় ত্বক কম আর্দ্র আবহাওয়ায়। উড়াল ভ্রমনে কফি ও মদ্যপান না করে শুধু পানি পান উত্তম। ভ্রমনের আগে, ভ্রমনের সময় ও পরে ময়শ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত। উড়ালের সময় মেকআপ না করা ভালো। ৩ আউন্স লোশন বরং রাখুন ব্যাগে।

ক্লোজ আপে ভালো দেখাবে

আলো বদলালে মুখের দেখনও বদলাবে। ফ্লুরোসেন্ট লাইটে ত্বকের টোন হলুদ বা লাল দেখাবে, এমনি আলোতে মৃদু হয় রং। টোন হয় কম। আয়না আলো সবই পরিবেশ দেয় দেখন চেহারার জন্য।

ধূমপানে নারীদের স্বাস্থ্যঝুঁকি বেশি


ধূমপান নারী-পুরুষ সকলের স্বাস্থ্যের জন্যই ক্ষতিকর। এ কারণে সিগারেটের প্যাকেটের একটা অংশজুড়ে সাদা-জমিনে কালো হরফে লেখা থাকে ‘ধূমপান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর’, ‘ধূমপান ক্যানসারের কারণ’ কিংবা ‘ধূমপান মৃত্যুর কারণ’—এ ধরনের কিছু সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরণমূলক বাণী।

কিন্তু সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব মিনেসোটার একদল গবেষক বলেছেন, সিগারেটের ধোঁয়ায় পুরুষের চেয়ে নারীর স্বাস্থ্যঝুঁকি ২৫ শতাংশ বেশি।

টাইমস অব ইন্ডিয়া অনলাইনের খবরে বলা হয়, র্যাচেল হাক্সলের নেতৃত্বে ইউনিভার্সিটি অব মিনেসোটার একদল গবেষক তাদের গবেষণায় দেখেছেন, সাধারণত দেখা যায়, পুরুষদের চেয়ে নারীরা কম সিগারেট খান। কিন্তু ওই কম পরিমাণ খাওয়াতেই তাঁদের স্বাস্থ্য পুরুষদের চেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

গবেষকেরা জানান, নারী নিজে ধূমপান করুন বা অন্য কোনো ধূমপায়ীর সঙ্গে থাকুন—দুই ক্ষেত্রেই পুরুষের চেয়ে তিনি বেশি ঝুঁকিতে থাকেন। গবেষকদের মতে, শারীরিকভাবে নারীরা পুরুষদের চেয়ে একটু বেশিই স্বাস্থ্যঝুঁকিতে থাকেন। গবেষণাকর্মটি দ্য ল্যানচেট চিকিত্সা সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়েছে

পেঁয়াজ কমায় দেহের বাড়তি ওজন



ঢাকা, ১৩ জানুয়ারি: আমাদের দেশে রান্নায় পেঁয়াজ ব্যবহার হয় অহরহ। কিন্তু এটি সরাসরি তরকারি হিসেবেও ব্যবহার হতে পারে এবং তা হতে পারে শরীরের জন্য খুবই পুষ্টিকর। একইসঙ্গে এটি কমাতে পারে আপনার শরীরের বাড়তি ওজনও।

পেঁয়াজের এ উপকারিতার জন্য সেই খ্রিস্টপূর্ব ৩৫০০ সালের দিকে মিশরীয়রা এর ভক্ত ছিল। খুব জনপ্রিয় ছিল সে সময় তরকারি হিসেবে পেঁয়াজ। গবেষকরা তাই বলেন।

পেঁয়াজে আছে উচ্চমানের সালফার যৌগ। আর এর কারণেই পেঁয়াজ কাটলে নাকে লাগে ঝাঁঝালো গন্ধ। চোখে পানি চলে আসে।

তবে এ বস্তুটিই আবার উপকারে আসে। গবেষকরা বলছেন, পেঁয়াজ উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। ফলে উচ্চরক্তচাপের রোগীরা নিয়মিত পেঁয়াজ সমৃদ্ধ তরকারি বা পেঁয়াজের তরকারি খেলে উপকার পাবেন।

শুধু তাই নয়, পেঁয়াজ হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকিও কমায়। অতএব যারা পেঁয়াজ খান তারা খানিকটা চিন্তামুক্ত থাকতে পারেন।

আরো চমকে যাওয়ার মতো তথ্য হলো, পেঁয়াজ ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়। পেঁয়াজের মধ্যে আছে ফাইটোকেমিক্যাল এবং ফ্লাবোনয়েড কোয়েরসেটিন। এ দুটো উপাদান ক্যান্সার কোষের অনিয়ন্ত্রিত গ্রোথ কন্ট্রোল করতে পারে বলে বিজ্ঞানীরা প্রমাণ পেয়েছেন।

শরীরের প্রয়োজনীয় ভিটামিন সি-এর ২০ ভাগ মেটানো সম্ভব একটা পেঁয়াজ থেকেই।

স্বাস্থ্য রক্ষায় পেঁয়াজের গুণাগুণ অনেক। আমাদের হাতের নাগালে থেকেও আমরা এর অনেক গুণ সম্পর্কে ভালো করে জানি না।

একটি বড় মাপের পেঁয়াজে ৮৬.৮ শতাংশ পানি, ১.২ শতাংশ প্রোটিন, ১১.৬ শতাংশ শর্করা জাতীয় পদার্থ, ০.১৮ শতাংশ ক্যালসিয়াম, ০.০৪ শতাংশ ফসফরাস ও ০.৭ শতাংশ লোহা থাকে। এছাড়া পেঁয়াজে ভিটামিন এ, বি ও সি থাকে।

পেঁয়াজের কিছু গুণাগুণ
ঠাণ্ডা লেগে মাথাব্যথা হলে ১ চামচ পেঁয়াজের রসের সঙ্গে দ্বিগুণ পানি মিশিয়ে একবার খেলে ব্যথা কমে যাবে।
জ্বর জ্বর ভাব হলে পেঁয়াজের রস নাক দিয়ে টেনে নিলে জ্বর জ্বর ভাব চলে যাবে।
বারবার বমি হলে চার-পাঁচ ফোঁটা পেঁয়াজের রস পানিতে মিশিয়ে সে পানি খেলে বমি হওয়া বন্ধ হয়ে যাবে।
হেঁচকি উঠলে পেঁয়াজের রস মিশিয়ে পানি খেলে হেঁচকি ওঠা বন্ধ হয়ে যাবে।
পেঁয়াজ খেলে শরীরের অতিরিক্ত ইউরিক এসিড বের হয়ে যায়।
পেঁয়াজের অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল বা ব্যাকটেরিয়া নামক গুণাগুণ রয়েছে। তাই ফোঁড়া বা ঘা হলে তা পেঁয়াজের রস দিয়ে ধুলে তাড়াতাড়ি সেরে যায়।
চুল ধোয়ার আগে মাথায় আধঘণ্টা পেঁয়াজের রস মেখে রাখলে চুলের গোড়া শক্ত হয় এবং নতুন চুল গজাতে সহায়তা করে।

মধু খেলে ওজন বাড়ে



নিউ ইয়র্ক, ১২ জানুয়ারি: যারা ওজন বাড়ানোর জন্য রাত-দিন শুধু চেষ্টা করে যাচ্ছেন, মধু তাদের জন্য অনেক কার্যকরী হতে পারে। কিন্তু তার আগে বুঝতে শরীরের মক্তি সঞ্চারের ধরন।



মানবদেহে দুইভাবে শক্তি সঞ্চিত থাকে, চর্বি এবং সুগার রূপে। ওজন বাড়ানোর জন্য সাধারণত আমরা মনে করি বেশি করে চর্বি জাতীয় খাবার খেলেই যথেষ্ট। কিন্তু এই ধারণা পুরোপুরি ঠিক নয়। যারা নিয়মিত ব্যায়াম বা কায়িক শ্রম তারা দিনভর চর্বি জাতীয় খাবার খেলেও কোনো লাভ হবে না। কারণ, অতিরিক্ত কায়িক শ্রমের ফলে চর্বি দ্রুত ঝড়ে যায়। তাই তাদের জন্য প্রয়োজন বেশি বেশি সুগার। যা দেহের কোষে কোষে জমে থাকে এবং খুব সহজে নিঃসৃত হয় না। তখন বেশি এক্সারসাইজ করলেও ঝড়ে যায় না দেহের শক্তি।

তখন চর্বিরূপে ঝরে যাওয়া এনার্জি মধু গ্রহণের ফলে তা আবার মাংসপেশীতে পুঞ্জীভূত হয় সুগার রূপে। আর তখনই দেহগড়নে আসে এক ধরনের পরিবর্তন। মূলত এভাবেই অ্যাথলেট এবং ভারোত্তলনকারীরা তাদের ফিটনেসকে নিয়ন্ত্রণ করে।

ওজন বাড়ানোর জন্য মধুর গুনাগুণ সম্বন্ধে আমেরিকান জার্নাল অফ ক্লিনিকাল নিউট্রিশন একটি প্রতিবেদনে জানায়, এক টেবিল চামচ মধুতে আছে ১৭.৩ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট। যা অ্যাথলেট বা শরীরচর্চাবিদদের এক টেবিল চামচ পরিমাণ এনার্জি এনহ্যান্সমেন্ট (শক্তিবর্ধক) জেলের মধ্যে থাকে। কিন্তু এক টেবিল চামচ মধুতে সেই কৃত্রিম শক্তিবর্ধক সমপরিমাণ উপাদনই থাকে। তাই আমেরিকান ক্লিনিকাল নিউট্রিশন বিভাগের গবেষকরা কৃত্রিম শক্তিবর্ধকের পরিবর্তে মধুকেই বেশি প্রাধান্য দিচ্ছে।

গবেষকরা আরো জানায়, নিয়মিত ব্যায়ামের পর শরীরের কার্বোহাইড্রেট লেভেল নিচে নেমে যায়, যার ফলে ক্লান্তি এসে শরীরে ভর করতে পারে। কিন্তু নিয়মিত মধু গ্রহণ করলে দেহের কার্বোহাইড্রেটের মাত্রা কখনোই নিচে নামে না। কারণ মধুতে থাকা কার্বোহাইড্রেটগুলো দেহের বিভিন্ন অংশ সমানভাবে বিভক্ত হয়ে যায় এবং তা প্রতিটি দেহ কোষ ও মাংসপেশীতে গিয়ে জমে থাকে বলে তা সহজে ঝরে যায় না। আর কার্বোহাইড্রেট লেভেল অপরিবর্তিত থাকে বলে, ক্লান্তিও শরীরে ভর করে না। শক্তি পুঞ্জিভূত থাকে দেহে, যা ওজন বাড়াতে সাহায্য করে।

মেছতা ব্রণের ক্ষত : লেজার কার্যকর নয়



প্রখ্যাত চর্মরোগ ও লেজার বিশেষজ্ঞ সিঙ্গাপুর ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ডা:সিএল গোহ-এর অভিমত:মেছতার কোন স্থায়ী চিকিত্সা নেই এবং কোন ধরণের লেজার মেছতার চিকিত্সায় সম্পূর্ণ কার্যকর নয়। মেছতা চিকিত্সায় সাময়িক উন্নতি হলেও স্থায়ীভাবে এখনও পর্যন্ত কোন চিকিত্সা বের হয়নি। ফ্রাকশনাল সিওটুসহ কোন লেজারে মুখের ব্রণের ক্ষত পুরোপুরি নির্মূল করা সম্ভব নয়।



বিশ্ববিদ্যালয় পড়া একটি মেয়ের মুখে মেছতার দাগ। গত দু’বছর ধরে মুখে এই দাগ বেশ গাঢ় হয়েছে। আমি চিকিত্সা করছি মাত্র তিনমাস হবে। আমি সাধারণত: মেছতার দাগে লেজার করিনা এবং রোগীদের মেছতার দাগে লেজার করা উচিত নয় এটা বুঝানোর চেষ্টা করি। কারণ মেছতার দাগে লেজার করা আর বুড়িগঙ্গায় কষ্টার্জিত টাকা ঢেলে দেয়ার মধ্যে কোন পার্থক্য দেখিনা। আমি সব সময় বলে আসছি মেছতার কোন স্থায়ী চিকিত্সা নেই। সুতরাং বেশী টাকা খরচ করে লেজার করার প্রয়োজন নেই। এ প্রসঙ্গে কিছু তথ্য তুলে ধরতে চাই।

গত বছর ডিসেম্বর মাসে ঢাকায় অনুষ্ঠিত হলো ডার্মাটোলজির ওপর ৭ম এশিয়ান কনফারেন্স। বাংলাদেশের খ্যাতিমান চর্মরোগ বিশেষজ্ঞগণ এই সম্মেলনে যোগদান করেন। তম্মধ্যে ছিলেন, অধ্যাপক একিউএম সিরাজুল ইসলাম, অধ্যাপক আগা মাসুদ চৌধুরী, অধ্যাপক এমইউ কবীর চৌধুরী, অধ্যাপক এম এ ওয়াদুদ, অধ্যাপক মুজিবুল হক, অধ্যাপক কাজী এ করিম, অধ্যাপক এএসএম জাকারিয়া স্বপন, অধ্যাপক মো: সিরাজুল হক, অধ্যাপক এহসানুল কবীর জগলুল, অধ্যাপক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ডা: মো: নূরুল আমিন, অধ্যাপক রেজা বিন জায়েদ, অধ্যাপক সৈয়দ আফজালুল করিম, অধ্যাপক শাহ আতাউর রহমান, অধ্যাপক জিনাত মেরাজ স্বপ্না, ডা: দীপক কুমার দাস সহ তিন শতাধিক দেশী-বিদেশী নবীন-প্রবীন চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ। অংশ নেন সিঙ্গাপুর ন্যাশনাল স্কিন সেন্টারের বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক সিএল গোহ ও অধ্যাপক গিয়াম ইয়ক সিন, পাকিস্তানের অধ্যাপক সৈয়দ আতিফ হাসনাইন কাজমী, ভারতের অধ্যাপক গুরমোহন সিং এর মত বিশ্বমানের বিশেষজ্ঞগণ।

ঢাকায় অনুষ্ঠিত দু’দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক কনফারেন্সে অধ্যাপক সিএল গোহ লেজার সম্পর্কে তার অত্যন্ত তাত্পর্যপূর্ণ উপস্থাপনায় সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করেন মেছতার কোন স্থায়ী চিকিত্সা নেই এবং কোন ধরণের লেজার মেছতার চিকিত্সায় সম্পূর্ণ কার্যকর নয়। মেছতার চিকিত্সায় সাময়িক উন্নতি হলেও স্থায়ীভাবে এখনও পর্যন্ত মেছতার কোন চিকিত্সা বের হয়নি। ওষুধ এবং লেজার মেছতার দাগ সাময়িকভাবে কমিয়ে রাখতে পারে। দ্বিতীয়ত: আর একটি বিষয়ে অধ্যাপক সিএল গোহ বিশেষজ্ঞদের মনে করিয়ে দেন ফ্রাকশনাল সিওটুসহ কোন লেজারে মুখে ব্রণের গর্ত, চিকেন পক্সের গর্ত পুরোপুরি নির্মূল করা সম্ভব নয়। সবচেয়ে আধুনিক লেজার দিয়েও শতকরা ২০ থেকে ৩০ ভাগের বেশী ব্রণের গর্ত দুর করা সম্ভব নয়। তিনি এ ক্ষেত্রে সিঙ্গাপুরের অভিজ্ঞতা ও পরিসংখ্যান তুলে ধরেন।

সিঙ্গাপুরের মত একটি উন্নত দেশে মেছতা ও ব্রণের ক্ষতের চিকিত্সা যেখানে সম্ভব হচ্ছেনা তখন বাংলাদেশের লেজার সেন্টারে কি করে মেছতার চিকিত্সা ও ব্রণের গর্ত চিকিত্সার দাবী করা হয় তার বিচারের ভার পাঠকদের কাছে ছেড়ে দিলাম। আপনারা প্রতারিত ও অপচিকিত্সার শিকার হচ্ছেন কিনা তা অবশ্যই ভেবে দেখবেন। আমি ব্যক্তিগতভাবে সিঙ্গাপুর, আমেরিকা ও ইউরোপে ডার্মাটোলজি, কসমেটিক ডার্মাটোলজি, লেজার ও কসমেটিক সার্জারীর ওপর উচ্চতর প্রশিক্ষণ নেয়া সত্বেও অত্যন্ত বিনয়ের সঙ্গে বলতে চাই আমি নিজে কখনও মেছতার দাগ নিরাময় করতে পারি অথবা ব্রণের গর্ত মুছে দিতে পারি এমন দাবী করিনা। বরং আমি দীর্ঘদিন ধরে লেখনীর মাধ্যমে রোগীদের সচেতন করার চেষ্টা করছি। কোন রোগীকে মিথ্যা তথ্যদিয়ে প্রলুব্ধ করার চেষ্টা কখনই করিনা। বরং সত্য তথ্য দেয়ার কারণে অনেক ক্ষেত্রে রোগী হারাতে হয়। যাহোক, আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই রোগীটির কথায় ফিরে আসি। তার সমস্যা বাজারে যত্রতত্র বিক্রিত ফেয়ারনেস ক্রিম লাগানোর পর তার মেছতার দাগের ওপর এক ধরণের কালোদাগ স্থায়ীভাবে বসে গেছে। যাকে বলা হয় পিআইএইচপি বা পোস্ট ইনফ্লামেটরী হাইপার পিগমেন্টেশন।

বাজারে নিয়ন্ত্রনহীনভাবে বিক্রিত নানা ধরণের অ্যারোমা, হারবাল ও ফেরারনেস ক্রিম ব্যবহারের পর প্রতিদিন স্কিন বিশেষজ্ঞদের চেম্বারে মুখে দাগবসে যাওয়া বা মুখ পুড়ে যাওয়া রোগীরা আসছে। এসব রোগীদের নিয়ে আর একদিন বিস্তারিত যাহোক, আমার চেম্বারে আসা পোষ্ট ইনফ্লামেটরী হাইপার পিগমেন্টেশন নিয়ে আগত রোগীটি মেছতার চিকিত্সায় বাজারে পাওয়া ক্রিম লাগানোর পর মুখের এই অবস্থা। আমি গত তিন মাস ধরে কিছু ডিপিগমেন্টিং ক্রিম ব্যবহার এবং অন্য একটি হালকা ট্রিটমেন্ট করে আশানুরূপ ফল পাচ্ছিনা। ফলে রোগীটি ক্ষুদ্ধ হয়ে আরও দু’টো লেজার সেন্টারের শরনাপন্ন হন। দু’টি সেন্টারের পক্ষ থেকেই বলা হয় তারা লেজারের মাধ্যমে মুখের দাগ তুলে দিতে পারবেন। কিন্তু রোগীটি তাদের কথায় আশ্বস্ত হতে না পেরে পুনরায় আমার কাছে এসেছে। যা হোক, আমি হয়ত লেজার চিকিত্সায় নগণ্য অবস্থানে রয়েছি, সে কারণে হয়ত বা বোধগম্য হয়না পোস্ট ইনফ্লামেটরী হাইপার পিগমেন্টেশন কিভাবে লেজার দিয়ে সারানো যায়। থাক এসব কথা। মুখে দাগ, ব্রণের ক্ষত, গর্ত রয়েছে এমন যেসব রোগীরা এক লেজার সেন্টার থেকে অন্য লেজার সেন্টারে ছুটছেন তাদের অনুরোধ করবো লেজার বা কসমেটিক ট্রিটমেন্ট বা অ্যারোমা, হারবাল ট্রিটমেন্ট করার পূর্বে অবশ্যই ভালো করে জেনে নেবেন কি চিকিত্সা করছেন এবং আসলেই কি এই ধরণের চিকিত্সায় মুখের মেছতা বা ব্রণের গর্তের কোন নিরাময় হবে কিনা। না জেনে, না বুঝে লেজারের নামে কাড়ি কাড়ি অর্থ ব্যয়ের কোন মানেই হয়না। আমার এ লেখায় হয়ত অনেকে আহত হতে পারেন। তবে বাস্তবতা হচ্ছে আমাদের সত্, সরলপ্রাণ রোগীরা যাতে প্রতারিত না হয় তা অবশ্যই দেখা একজন চিকিত্সক ও লেখকের নৈতিক দায়িত্ব বলে মনে করি।

আদা: নানা রোগের মহৌষধ



বচনে আছে, ‘প্রাতে খেলে নুন আদা অরুচি থাকে না দাদা।’ আরো কতশত উপকারিতা বিজ্ঞানীরা বের করেছেন তা বলাই বাহুল্য। কৃত্রিম ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ফ্যাসাদে পড়ে এখন সবাই একটু শান্তি খুঁজছেন প্রাকৃতিক ও ভেষজ দ্রব্যের দিকে।

একটু ঠাণ্ডা লেগে গেলে কিংবা খেলার মধ্যে হাঁপিয়ে উঠলে আদা খাওয়া যায়। কারণ আদা কাশি কমাতে সহায়ক। আদায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণ পটাশিয়াম। আছে যথেষ্ট পরিমাণ আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম ও ফরফরাসের মতো খনিজ পদার্থ। এছাড়া সামান্য পরিমাণে আছে সোডাম, জিঙ্ক ও ম্যাঙ্গানিজ।
আদা রান্না অথবা কাঁচা দু’ভাবেই খাওয়া যায়। গলার খুসখুসে ভাব কমাতে কাঁচা আদা খুবই উপকারী।

গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় আদা থাকলে যে কোনো ধরনের ঠাণ্ডাসংক্রান্ত রোগবালাই, কাঁশি ও হাঁপানির তীব্রতা কমিয়ে দেয়। আর্থ্রাইটিসের মতো রোগের ক্ষেত্রেও ব্যথানাশক হিসেবে কাজ করে আদা।

এছাড়া চুল পড়া ও বমিরোধক হিসেবেও আদা বেশ কাজে দেয়। ভিটামিন -ই, এ, বি ও সি এর পরিমাণও কম নয় আদার মধ্যে।

রক্তের অনুচক্রিকা এবং হৃদযন্ত্রের কার্যক্রম ঠিক রাখতেও আদা দারুণ কার্যকর। মুখের রুচি বাড়াতে ও বদহজম রোধে আদা শুকিয়ে খেলে বাড়বে হজম শক্তি।

আমাশয়, জন্ডিস, পেট ফাঁপা রোধে আদা চিবিয়ে বা রস করে খেলে উপকার পাওয়া যায়। এছাড়া যারা গলার চর্চা করেন তারা অনেকেই গলা পরিষ্কার রাখার জন্য আদা আর লবণকে পছন্দ করে থাকেন।

আসলে মসলা ছাড়াও আদার রয়েছে বিভিন্ন গুণ। ইউনিভার্সিটি অব মিয়ামি মেডিক্যাল স্কুলের বিজ্ঞানীদের মতে, খাদ্যের সঙ্গে নিয়মিত আদা খেলে গিঁটে ব্যথা সারে অনেকখানি।

শীতে কাঁপুনি ধরে যাচ্ছে? এককাপ আদার চা খেয়ে নিন। বেশ আরাম বোধ করবেন। আদা সেন্ট্রাল নার্ভাস সিস্টেমকে উত্তেজিত করে রক্ত পরিসঞ্চালন বৃদ্ধি করে। সেই সঙ্গে রক্তনালী প্রসারিত করে। ফলে শরীর গরম থাকে দীর্ঘক্ষণ।

এছাড়া যাদের মোশন সিকনেস আছে, তারা আদার সাহায্যে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারেন।

পেটে পাথর নয় তো



ঢাকা: পেটে ব্যথা, সঙ্গে বুক জ্বালা? অম্লচূর্ণ, পাচন, শিশির পর শিশি হোমিওপ্যাখথি ওষুধ, মুড়ি-মুড়কির মতো অ্যান্টাসিড মায় কেউ কেউ মন্দির বা পীরবাবার জলও খাচ্ছেন দিনের পর দিন। লাভের লাভ কিছু হচ্ছে না, বরং উত্তরোত্তর পেটের ব্যথা বেড়েই যাচ্ছে।

কেন এত ব্যথা? গল ব্লাডারের পাথর নয় তো? গল ব্লাডার বা পিত্তথলিতে পাথর থাকলে তা অপারেশন আজকাল নিত্য নৈমিত্তিক ঘটনা। আমাদের দেশে আলট্রাসোনোগ্রাফির ব্যবস্থা যত বাড়ছে ততই বেশি করে পিত্তথলির পাথর ধরা পড়ছে।



পিত্তথলি (গল ব্লাডার) কোথায় থাকে, তার কাজ কী?

পিত্তথলি থাকে লিভারের ঠিক ডানদিকে। এর কাজ হলো লিভার বা যকৃৎ থেকে যে পিত্তরস বের হয়, তাকে ধরে রাখা। পাকস্থলীতে খাদ্য পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গে এই পিত্তথলি সঙ্কুচিত হয়। ফলে এই পিত্তরস (Bile) ক্ষুদ্রান্তে (Duodenum) গিয়ে খাদ্যের সঙ্গে মেশে।

পিত্তথলিতে পাথর হয় কেন

বাচ্চা থেকে অল্পবয়সীদের ক্ষেত্রে পিত্তথলিতে পাথর হওয়ার একটা বড় কারণ হলো থ্যা লাসেমিয়া বা হিমোলাইটিক অ্যানিমিয়া (Haemolytic Anaemia)-এর ফলে রক্তে লোহিত কণিকা বেশি মাত্রায় ভেঙে গিয়ে পিত্তথলিতে পাথর তৈরিতে অংশ নেয়।

মহিলাদের পিত্তথলিতে পাথর হওয়ার সম্ভাবনা পুরুষদের তুলনায় বেশি। গর্ভাবস্থার পরে বা জন্মনিয়ন্ত্রণের বড়ি নিয়মিতভাবে খেলে গল ব্লাডারে পাথর হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে। এর জন্য ইস্ট্রোজেন (Estrogen) হরমোন দায়ী।

গল ব্লাডারে পাথরের উপসর্গ কী

৫০-৬০শতাংশ মানুষের গল ব্লাডারে পাথর নিয়ে কোনো অসুবিধা হয় না। (Asymptomatic) বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এই পাথর হওয়ার সম্ভাবনাও বাড়তে থাকে। কারো কারো সামান্য হজমের গোলমাল অথবা পেটের ওপরের অংশে সামান্য ব্যথা বা যন্ত্রণা অনুভব করা-এগুলিই সাধারণ উপসর্গ।

যদি কোনো কারণে জটিলতা তৈরি হয় সেক্ষেত্রে পুঁজের সংক্রমণ হয় (Acute Cholecystitis) অথবা গ্যাংসগ্রিন বা ফুটো (Perforation) হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকতে পারে। এই অবস্থায় পেটে অসম্ভব যন্ত্রণা এবং বমি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কাঁপুনি দিয়ে জ্বরও আসতে পারে।

পিত্তথলির পাথর থলি থেকে বেরিয়ে এসে পিত্তনালীতে (Bile duct) অবরোধ করতে পারে তখন জনডিস (Obstructive Jaundice) সহ পেটে ব্যথা হতে পারে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে পাথর পিত্তনালীতে বেরিয়ে এসে প্যািনক্রিয়াটাইটিসের মতো মারাত্মক প্রাণহানিকর সমস্যাও সৃষ্টি করতে পারে। প্রসঙ্গত, পিত্তথলিতে ছোট ছোট একাধিক পাথর থাকলে এর সম্ভাবনা বেশি।

ভারতে আর একটি বিষয় খুবই উল্লেখযোগ্য যে, অনেকদিন পিত্তথলিতে পাথর থাকলে ক্যা নসার হওয়ার একটা সম্ভাবনা দেখা দেয়, পশ্চিমের দেশগুলিতে এই সম্ভাবনা খুবই কম। তবে একথাও সত্যি যে, পিত্তথলিতে ক্যাননসার হতে হলে পাথরকে অন্তত ৬-১০বছর থাকতে হবে। দুঃখের বিষয় হলো এই যে, এই ধরনের রোগীর সামান্য হজমের গোলমাল ছাড়া আর বিশেষ কোনো সমস্যা দেখা যায় না। ফলে বেশিরভাগ রোগীই সম্পূর্ণ অন্ধকারে থেকে যান।

পাথর সন্দেহে কী পরীক্ষা করা যেতে পারে

এক্ষেত্রে সাধারণত দুটি পরীক্ষা করা যেতে পারে। প্রথমত, পেটের আলট্রাসোনোগ্রাফি (Ultra Sonography) এবং দ্বিতীয়ত লিভার ফাংকশন টেস্ট (LFT), শেষটি রক্তের একটি পরীক্ষা। জেনে রাখা দরকার যে, যদিও পিত্ততলির পাথর নির্ণয়ে আলট্রাসোনোগ্রাফি প্রায় ১০০% সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারে, কিন্তু পিত্তনালীর পাথরের ক্ষেত্রে আলট্রাসোনোগ্রাফি ৭০-৮০% ষেত্রে নির্ণায়ক ভূমিকা পালন করে।

এক্ষেত্রে কোনো সন্দেহ থাকলে কিংবা লিভার ফাংকশন টেস্টের রিপোর্ট যদি স্বাভাবিক না থাকে তবেই MRCP (Magnetic Resonance Cholangio Pancreatography) অথবা ERCP (Endoscopic Retrograde Cholangio Pancreatography) পরীক্ষার প্রয়োজন হয়। MRCP হলো এক ধরনের MRI স্ক্যাsন।, যেটি পিত্তনালীর পাথর নির্ণয়ে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

ERCP পরীক্ষায় রোগীকে সামান্য ঘুম পাড়িয়ে একটি ভিডিও ক্যাামেরা খাদ্যনালীর মধ্যে দিয়ে পেটে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। সেটি পিত্তনালীর কাছে গিয়ে পিত্তনালীর ভেতরের ছবি তুলে আনে। ERCP-র আরো সুবিধা হলো যে, পিত্তনালীতে যদি পাথর দেখতে পাওয়া যায় তবে তা অনায়াসে বের করে আনা যায়। ERCP-তে জটিলতা হওয়ার সম্ভাবনা ২-৩শতাংশ।

পিত্তথলির পাথরের চিকিৎসা

মোটের ওপর পিত্তথলির পাথরের চিকিৎসাকে দু’ভাগে ভাগ করা যায়।

প্রথমত, যে সমস্ত রোগীর পাথর থাকার জন্য নানারকম সমস্যাহর সৃষ্টি হচ্ছে। দ্বিতীয়ত, যাদের সেই রকম কোনো সমস্যাস নেই, (Asymptomatic)। প্রথম গ্রুপটির ক্ষেত্রে (যাঁদের সমস্যা আছে) স্থায়ী সমাধান হলো গল ব্লাডার বা পিত্তথলি অপারেশন করে বাদ দিয়ে দেয়া (Cholecystectomy)। আর দ্বিতীয় গ্রুপে যারা অবস্থান করছেন অর্থাৎ যাদের আপাতত সেই রকম কোনো সমস্যাল নেই তারা একজন অভিজ্ঞ সার্জনের তত্ত্বাবধানে থেকে যেতে পারেন। তবে একথা মনে রাখা দরকার যে, সেই রোগীকে নিয়মিতভাবে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে চলতে হবে এবং কোনো সমস্যার উদ্রেক হলে তখন অপারেশনের কথা ভাবা যেতে পারে।

গর্ভাবস্থার অব্যবহিত পরে পিত্তথলিতে যে পাথর দেখা যায় তার প্রায় ২৫-৩০ শতাংশ সাধারণত সন্তান প্রসবের ৪-৬ মাসের মধ্যেই নিজে থেক মিলিয়ে যায়। মনে রাখা দরকার যে, এই ঘটনাটি শুধু গর্ভাবস্থার পরেই ঘটে থাকে। কাজেই সেক্ষেত্রে কোনো জটিলতা না থাকলে সন্তান প্রসবের ৬ মাসের মধ্যে গল ব্লাডার অপারেশন না করানোই ভালো। ৬ মাস বাদে একটি আলট্রা সোনোগ্রাফি করার পরেও যদি পিত্তথলিতে পাথর দেখা যায় তখন অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা নেয়াই ভালো।

গল ব্লাডার বা পিত্তথলির অপারেশন কী কী ভাবে করা যায়

গল স্টোনের চিকিৎসা হলো পাথর সমেত পিত্তথলিটি বাদ দিয়ে দেওয়া। পিত্তথলিটি বাদ দেওয়ার কারণ হলো-একবার পাথর তৈরি হলে পিত্তথলির উপযোগিতা চলে যায়। সেক্ষেত্রে পাথর বের করে দিলেও এই পিত্তথলিতে নতুন করে পাথর তৈরি হতে পারে। ফলে সমস্যা চলতেই থাকে।

পিত্তথলি বাদ দেয়ার পরে অবশ্যই এটি বায়োপসি (Biopsy) করা উচিত। এই অপারেশন দু’ভাবে করা যেতে পারে।

(১) Minimally Invasive Surgery বা চলতি কথায় মাইক্রোসার্জারি।

(২) Traditional বা ওপেন সার্জারি।

Minimally Invasive Surgery আবার দু’রকমের হয়। (এক) Laparoscopic (ল্যা পারোস্কোপিক) Surgery- এই পদ্ধতিতে রোগীকে অজ্ঞান করে পেটের চারটি অংশে চারটর ছিদ্র করা হয়। এই ছিদ্রের মাধ্যমে পেটের ভেতর একটি ছোট্ট ক্যাoমেরা এবং প্রয়োজনীয় যন্ত্র ঢুকিয়ে দিয়ে পিত্তথলিটি বাদ দিয়ে দেওয়া হয়। (দুই) Mini cholecystectomy (মিনি কোলেসিস্টেকটমি) এই পদ্ধতিতে পেটের ওপরের অংশে ৫০-৬০মিলিমিটার কাটতে হয় এবং কিছু প্রয়োজনীয় যন্ত্রের সাহায্যে পিত্তথলি বাইরে বের করে নিয়ে আসা হয়। এই পদ্ধতির একটি সুবিধা হলো যে এটি বিনা অজ্ঞানে অর্থাৎ শুধুমাত্র অবশ করেও (Regional Anaesthesia) করা যায়। এর ফলে যে সমস্ত রোগীকে অজ্ঞান করার অসুবিধা আছে যেমন হাঁপানি বা ক্রনিক ব্রঙ্কাইটিসের কারণে শ্বাসকষ্ট হয় বা যাঁরা খুবই বয়স্ক তাঁদের ক্ষেত্রে অপারেশনের ঝুঁকি অনেকটই কমে যায়।

উপরোক্ত পদ্ধতিতে যেহেতু খুবই অল্প পরিমাণে চামড়া কাটা হয়, সেকারণে রোগী ২-৩ দিনের মধ্যেই সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে যেতে পারেন।

ওপেন সার্জারির পদ্ধতি অনেক বছর ধরেই পরীক্ষিত। মনে রাখতে হবে, যে কোনো কারণে Minimally Invasive Surgery করা না গেলে একমাত্র রাস্তাকিন্তু এই পদ্ধতি।

গল ব্লাডার অপারেশনের পর কী কী সমস্যা হতে পারে

সাধারণত সব অপারেশনেই সামান্য রক্তক্ষরণ বা জীবাণুর সংক্রমণের সম্ভাবনা সর্বজন স্বীকৃত।

পিত্তনালীতে পাথর থেকে যেতে পারে সন্দেহ থাকলে অপারেশন চলাকালীন Cholangiogram বা এক ধরনের পিত্তনালীর Xray করা হয়। সবচেয়ে ভালো হয় যদি কোলোডোকোস্কোপ ব্যবহার করা যায়। এটি একটি খুবই ছোট ক্যা মেরা যেটা অপারেশন চলাকানীন পিত্তনালীর ভেতরে ঢুকিয়ে দিয়ে পিত্তনালীর অভ্যন্তরীণ অংশ দেখা হয়। নালীতে পাথর থাকলে প্রয়োজনমতো তা বের করেও ফেলা যায়। তবে ঘটনা এই যে, এই যন্ত্রের ব্যবহার খুব কম প্রতিষ্ঠানের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রয়েছে। আর একটা গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা হলো গল ব্লাডার অপারেশনের সময় পিত্তনালী জখম হওয়া। তবে এই ধরনের সমস্যাা নিতান্তই হাতে গোনা। এই সমস্যায় দেখা দিলে খাদ্যনালীর খানিকটা অংশ ব্যবহার করে নতুন করে পিত্তনালী তৈরি করতে হয়। এই ধরনের জটিল অপারেশনের দরকার হলে কোনো বড় প্রতিষ্ঠানে অভিজ্ঞ সার্জেনের পরামর্শ নেওয়াই যুক্তিযুক্ত।

অপারেশনের পর বিধিনিষেধ

Minimally Invasive Surgery (মাইক্রোসার্জারি) হলে ১০-১৫দিনের মধ্যেই সুস্থ হয়ে কাজে ফেরা যায়।

অপারেশনের পরে রোগীর বাড়িতে একেবারে শুয়ে না থেকে সামান্য চলাফেরা করা ভালো, তাতে তাড়াতাড়ি সুস্থ হওয়া যায়। গল ব্লাডার অপারেশন হয়েছে বলে খাওয়া-দাওয়ার খুব একটা বাছবিচার করার প্রয়োজন নেই। তবে তেল, ঘি বা চর্বি জাতীয় খাবার কম খেলেই ভালো। কারণ কিছু না হোক কোলেস্টেরল ও ট্রাইগ্লিসারাইডের হাত থেকে আপনার হার্টকে রক্ষা করবে।

Blog Archive

Recent Posts

Categories

Unordered List

Sample Text

Pages